ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পেলেন প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবস করানো সেই নেতা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৩ এএম

লক্ষ্মীপুরে খাবার হোটেলে আহার করার সময় রোজাহীন কয়েকজনকে বের করে রাস্তায় প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবস করানো বণিক সমিতির সেই নেতা ক্ষমা চেয়েছেন।
বুধবার (১২ মার্চ) রাতে জেলা পুলিশের হস্তক্ষেপে সদর থানা এলাকায় এক ভিডিও বার্তায় ভুক্তভোগী দুজনকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমা চান লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আজিজ।
কয়েকজন সাংবাদিকদের দেওয়া ভিডিও বার্তায় দেখা যায় আজিজ ভুক্তভোগী মুনছুরুল হক ও মো. সাজু নামে দুজনকে জড়িয়ে ধরেন এবং ক্ষমা চান। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া লাল চুল ও দাঁড়িওয়ালা সেই বৃদ্ধকে ভিডিও বার্তায় দেখা যায়নি।
সাংবাদিকদের দেওয়া ভিডিও বার্তায় আব্দুল আজিজ বলেন, কয়েকজন হোটেলে খাবার খাওয়ার জন্য ঢুকেছেন। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তাৎক্ষণিক আমি গিয়ে উনাদেরকে বলেছি আপনারা কেন খাচ্ছেন। আপনারাতো মুসলমান। সেক্ষেত্রে তারা বলেছে রোজা রাখেনি। আমি বলেছি আপনারা রোজা রাখিয়েন। আমি আসলে যে কাজটি করেছি, এটি অন্যায়, অপরাধ। এটা ধর্মীয় অনুভূতি, সেজন্য এটা আমার করা ঠিক হয়নি। এজন্য আমি উনাদের কাছে ক্ষমা চাই। উনারা যেন আমাকে ক্ষমা করে দেয়। আমি এ ধরণের পুনরাবৃত্তি আর কখনো করব না। এ ধরণের কাজের সঙ্গে জড়িত হব না।
এর আগে দুপুরে রোজার পবিত্রতা রক্ষায় শহরের থানা রোড এলাকায় হিন্দুদের কয়েকটি পর্দা লাগানো খাবার হোটেলে লাঠি হাতে বণিক সমিতি নেতা আজিজ অভিযান চালায়। এসময় রোজাহীন কয়েকজন যুবক-বৃদ্ধকে হোটেল থেকে বের করে রাস্তায় প্রকাশ্যে তিনি কানে ধরে উঠবস করতে বাধ্য করেন। ঘটনাটির কয়েক টুকরো ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় নানান সমালোচনা। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ঘটনায় সংবাদ পরিবেশন হয়। এতে রাতে সদর থানা পুলিশ তাকে আটক করে৷
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভুক্তভোগী মুনছুরুল হক ও মো. সাজু জানায়, তারা রোজা রাখেনি। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় বণিক সমিতি নেতা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছেন। এখন তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। এখন আর তাদের মনে কষ্ট নেই। তারা আইনগত ব্যবস্থাও নেবেন না। আইনগত ব্যবস্থায় না যাওয়া নিয়ে কারো ধারা প্ররোচিত বা জোর করেনি।
সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ঘটনার প্রেক্ষিতে আজিজকে থানায় ডেকে আনা হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী দুজনকে আমরা থানায় এনেছি। কেউ তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেয়নি। এছাড়া আজিজ নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। এতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী লাল চুল-দাঁড়িওয়ালাকে আমরা খুঁজেছি পাইনি। শুধু লাল দাঁড়িওয়ালা না, ভুক্তভোগী অন্য কেউ এসেও যদি অভিযোগ দেয় আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।