Logo
Logo
×

সারাদেশ

৮ মাস ধরে বেতন পান না কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মীরা

Icon

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৭ পিএম

৮ মাস ধরে বেতন পান না কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মীরা

আট মাস ধরে বেতন পান না বাগেরহাটের ২১১ কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি)। বেতন না পাওয়ায় আর্থিক কষ্টে ভুগছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া এসব কর্মীরা। পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত ওষুধ সরবরাহও বন্ধ রয়েছে।  কোথাও কোথাও ওষুধের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া সরকারি এ প্রতিষ্ঠান থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরা।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, বাগেরহাটে ২১৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। যার মধ্যে তিনটিতে সিএইচসিপি পদ শূন্য রয়েছে। ২১১ সিএইচসিপি গত বছরের জুলাই থেকে বেতন পান না। দীর্ঘদিন ধরে বেতন বন্ধ থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। কেউ কেউ ক্লিনিকে সেবা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। কেউ তুলনামূলক কম সেবা দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নিয়মিত আসছেন না ক্লিনিকে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা চালু রাখতে অতিদ্রুত বেতন চালু করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও সিএইচসিপিরা।

বাগেরহাট সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এলাকার লোকজন প্রায়ই ছোট ছোট অসুস্থতায় রাজাপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে যায়। এখানের ম্যাডাম (সিএইচসিপি) নাকি অনেকদিন বেতন পায় না। এ রকম হলে তো তিনি আমাদের সেবা দেবেন না।’

সদর উপজেলার রহিমাবাদ কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা বাসন্তি রানী দাস নামের এক রোগী বলেন, ‘জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়াসহ ছোটখাট যে কোনো সমস্যায় আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকে আসি। ক্লিনিকগুলোতে আগের মতো ওষুধ পাওয়া যায় না। সিএইচসিপি বলছে, সরকার ওষুধ কমিয়ে দিছে।’

রহিমাবাদ কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘প্রায় আট মাস ধরে বেতন পাই না। খুব কষ্টে সংসার চলছে। তারপরও রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

একই উপজেলার সাবেকডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি সৈয়াদা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়া খুবই কষ্টের। এটা কাউকে বলা যায় না। আর আগে ৩২ প্রকারের ওষুধ দিত। এখন দেয় মাত্র ২০ ধরণের।’

রাজাপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি সুবর্না বলেন, ‘জুলাই মাস থেকে আমাদের বেতন হচ্ছে না। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ টাকা ব্যয় করে ক্লিনিকে আসতে হয়। বেতন না পাওয়ার কারণে খুবই হতাশ হয়ে যাচ্ছি। মানসিকতাও ভাল নেই।’

কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপিদের নির্দিষ্ট নিয়ম করে রোগীদের সেবা দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারণ করে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার।  বাগেরহাটের কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার অনুপম রানী দাস বলেন, ‘আমরা ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ক্লিনিকে সিএইচসিপিদের পাশাপাশি রোগীদের সেবা দেই। আামরা নিয়মিত বেতন পেলেও সিএইচসিপিরা বেতন পাচ্ছে না। সেবা নিশ্চিত করতে সিএইচসিপিদের বেতন চালু করতে হবে।’

বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক আগে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে চলত। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে একটি ট্রাস্টের আওতায় নেওয়া হয়। এ জন্য সিএইচসিপিদের নিয়োগপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ট্রাস্টের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করি বর্তমান সরকার দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করবেন।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম