জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে প্রবাসীর জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৮ পিএম

নোয়াখালীর হাতিয়ায় এক প্রবাসীর জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর দাবি, ওই জায়গা থাকা গাছ কেটে নিয়ে গেছেন জামায়াত নেতা। পাশাপাশি মাটি ভরাটও করেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার জামায়াত নেতা বলেন, জমিটি আমার। তবে, জমি বিক্রেতা বলছে, জামায়াত নেতার কাছে আমি যেই জমি বিক্রি করেছি সেটি অন্যটি।
গত শুক্রবার উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা
করেছেন ওই প্রবাসীর বাবা। আর সৌদি আরবে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটে সাহায্য চেয়ে আবেদন
করেছে ওই প্রবাসী।
জাহাজমারা ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের বিরবিরি গ্রামের আমির হোসেনের
ছেলে প্রবাসী এমরান উদ্দিন। আর অভিযুক্ত জামশেদ একই গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে। তিনি
ইউনিয়নের জামায়াতে ইসলামীর রুকন পদে রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে রয়েছেন এমরান। প্রবাস
জীবনের কষ্টসাধ্য উপার্জন দিয়ে নিজ গ্রামের আব্দুর রহিম কাছ থেকে ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ
জমি কিনেন তিনি। পরে সেখানে বাড়ি তুলে বসবাস করছে এমরানের পরিবার।
সম্প্রতি প্রবাসীর ওই জমির একটি অংশ নিজের বলে দাবি করে জামশেদ। শুক্রবার
সকালে লোকজনকে নিয়ে এমরানের বাড়ি থেকে নারকেল গাছসহ অন্যান্য গাছ কেটে নিয়ে যায়। পরে
ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ভরাট করে। এ সময় প্রবাসীর বাবা আমির হোসেন বাঁধা দিতে গেলে তাকে
হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ভুক্তভোগী প্রবাসীর বাবা বাদী হয়ে আদালতে ১৩ জনকে আসামি
করে একটি মামলা করেন।
এদিকে ঘটনার দিন এমরান সৌদি থেকে মোবাইলে আসামিদের বারবার নিষেধ করলেও
আসামিরা তার কথা শুনেননি। প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে তারা। এমতাবস্থায় এমরান
সৌদি আরবে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন করেন। কনস্যুলেট
জেনারেলের আবেদনটি শ্রম কাউন্সিলর নোয়াখালী জেলা প্রশাসককে পাঠায় ও আইনানুগ ব্যবস্থা
নেওয়া জন্য বলে।
অভিযোগের বিষয়ে জামায়াত নেতা জামশেদ উদ্দিন বলেন, ‘আব্দুর রহিমের থেকে
এ জায়গা আমি কিনেছি। আমি আমার জায়গা থেকে গাছ কেটেছি। মাটি ভরাট করেছি। কারো কোনো জায়গা
আমি দখল করিনি।’
জমি বিক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমি এ জায়গা প্রবাসী এমরান উদ্দিনের
কাছে বিক্রি করেছি। আর জামশেদ উদ্দিনের কাছে যেটা বিক্রি করেছি সেটা বাড়ির উত্তর পাশে।
কিন্তু জামশেদ জোর করে এমরানের সীমানায় ঢুকে গাছ কেটে, মাটি ভরাট করে দখলের চেষ্টা
করেছে।’
হাতিয়া থানা জামায়াতের আমির মাস্টার বোরহানুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ সম্পর্কে
আমি জেনেছি। এটি তদন্তের জন্য আমাদের সাংগঠনিকভাবে একজন প্রতিনিধিকে দায়িত্ব দেওয়া
হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জাহাজমারা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, বিগত কয়েক
বছর ধরে এমরান উদ্দিন জমিটি ভোগ দখল করে আসছেন। হঠাৎ করে জামশেদ লোকজন নিয়ে এসে গাছ
কেটে মাটি ভরাট করে জায়গা দখলের চেষ্টা করে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘প্রবাসীর অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে।’