ছিনতাইকারী থেকে রক্ষায় ডিভাইস উদ্ভাবনের ঘোষণা

মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
ভোলার মনপুরায় ক্ষুদে বিজ্ঞানী তাহসিন পানিতে পড়ে শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার ডিভাইস আবিষ্কার করে দেশে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন। তিনি শুধু মনপুরার ক্ষুদে বিজ্ঞানী নয়, এ বছর ১৪ জানুয়ারি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত ন্যাশনাল ক্রিয়েটিভ চ্যালেঞ্জ-এ দ্বিতীয় হন। তার আবিষ্কৃত ডিভাইসগুলো দেখে অভিভূত হন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ।
সেই মনপুরার ক্ষুদে বিজ্ঞানী ও ন্যাশনাল ক্রিয়েটিভ চ্যালেঞ্জ-এ দ্বিতীয় হওয়া তাহসিন ঢাকার মিরপুরে জুমার নামাজ শেষে ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারায়। এমনকি ছিনতাইকারীদের দুই দফা বেধড়ক মারধরে সংজ্ঞাহীন হয়ে যায়। তিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বিছানায়। ছিনতাইকারীদের সংঘবদ্ধ দল উল্টো তাহসিনকে ছিনতাইকারী ট্যাগ দিয়ে মারধর করছিল।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় ভেরিফায়েড ফেসবুকে ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে মারধর ও অসুস্থ হওয়ার ঘটনা তুলে ধরে ক্ষুদে বিজ্ঞানী লিখেন-
‘ছিনতাইকারী ভাইয়ারা আপনারা আমাকে এভাবে মারতে, আপনাদের একটু মায়াও হয় নাই...।’
তবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরে জুমার নামাজ শেষে মেইন রোড দিয়ে হেঁটে মিরপুর ১০ যাওয়ার সময়। তার এ ঘটনা ফেসবুকে দেওয়ার পর হৈ চৈ পড়ে যায়। সবাই সহমর্মিতা ও নিন্দার পাশাপাশি ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন।
তবে ক্ষুদে বিজ্ঞানী তাহসিন নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ মর্মান্তিক ঘটনার জন্য সাধারণ মানুষ যাতে ছিনতাইকারীদের হাত রক্ষা পান এ রকম অভাবনীয় ডিভাইস আবিষ্কারের ঘোষণা দেন। তিনি ঢাকায় ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব ইজ্ঞিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ম বর্ষে অধ্যায়নরত।
তাহসিন ফেসবুকে ছিনতাইয়ের ঘটনা যেভাবে বর্ণনা করলেন- গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জুমার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হয়ে মেইন রোড দিয়ে হেঁটে হেঁটে মিরপুর-১০ যাচ্ছিলাম একটা কাজের জন্য। হঠাৎ করে তিনটা অপরিচিত ছেলে (তাদের বয়স ২১ থেকে ২৫ বছর এর মধ্যে)। আমার চলার পথে বাধা দিয়ে বলে, তুমি আর একটা ছেলে আমাকে ছিনতাই করেছ কেন। ওদের ভয়ে তাহসিন পাশে থাকা প্লাস্টিক ডোর দোকানে ঢুকে পড়ে। দোকনদারও তাহসিনকে বের করে দেয়। এরপর আরও ৫-৬ জন ছেলে আসে। পরে মারধর করে একটা বিল্ডিংয়ের নিচে নিয়ে গিয়ে ভিডিও করে। ওদের মারধরে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এ ঘটনায় রাস্তায় মানুষ জড়ো হয়ে যায়। অধিকাংশ মানুষ বলতে থাকে ওকে দেখে ছিনতাইকারী মনে হয় না। তখন ছিনতাইকারীরা বলে ও ডিবি পরিচয়ে আমাদের ছিনতাই করে। এরপর আমার পরিচিত সোহেল এসে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। তাহসিন বুকে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়ে তিন দিন ধরে অসুস্থ হয়ে বিছানায় ছিলেন। সুস্থ হয়ে মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে ঘটনার বর্ণনা দিলেন।
ক্ষুদে বিজ্ঞানী তাহসিন যুগান্তরকে জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো ওরা আমাকে উলটো ছিনতাইকারী ট্যাগ দেয়। ছিনতাইকারীদের হাত থেকে সাধারণ মানুষ যাতে বাঁচতে পারে সেজন্য একটি ডিভাইস আবিষ্কার করবেন বলে জানান তিনি।