
প্রিন্ট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
ফটিকছড়িতে থামানো যাচ্ছে না মাটি খেকোদের

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩১ পিএম

আরও পড়ুন
রাত যতই গভীর হয় ততই বাড়ে শব্দ। এ শব্দ স্ক্যাভেটর, পেলুডার ও মাটি বোঝাই গাড়ির। বিকট শব্দে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাটি খেকোদের উৎপাত বাড়তে থাকে। ফসলি জমির টপসয়েল থেকে শুরু করে নদীর পাড় ও টিলা কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে মাটি খেকোরা। সংঘবদ্ধ এ সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় উপজেলা প্রশাসন। এতক্ষণ বলছিলাম চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার কথা।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন এবং দুই পৌরসভায় রয়েছে মাটি খেকোদের
প্রভাব। কৃষি জমির টপসয়েল, হালদার পাড় ও টিলা কেটে সাবাড় করছে তারা। ভূমি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি
দেখিয়ে রাতের আঁধারে এসব মাটি বেচাকেনার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।
এতে করে কমছে ফসল উৎপাদন। কমছে কৃষিজ জমি। হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য। নষ্ট হচ্ছে রাস্তা-ঘাট।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সন্ধ্যা নামলেই জমে ওঠে মাটি কাটার মহোৎসব। প্রশাসনের
অভিযান এড়াতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে ওত পেতে থাকে মাটি খেকোদের নিয়োগকৃত পাহারাদার।
সরেজমিনে উপজেলার পাইন্দং ইউপি, ফকিরাচান, শেতকুয়া, বকশুর ঘাটা, আমতল
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, স্ক্যাভেটরের মাধ্যমে কৃষি জমির ৮ থেকে ১০ ফুট কেটে নেওয়া হয়েছে।
এমনকি হালদা নদীর পাড় থেকেও কেটে নেওয়া হয়েছে মাটি। হারুয়ালছড়ি, ভূজপুর, দাঁতমারা,
সুয়াবিল ও ব্রাহ্মনহাটের হালদার অংশে কাটা হচ্ছে পাড়। অন্যদিকে বাগানবাজার ইউনিয়নের লালমাই, গজারিয়া,
খেদা ও নারায়ণহাট ইউপির দক্ষিণ জুজখোলা, চাঁনপুর, ধামারখিল এলাকায় কেটে নেওয়া হচ্ছে
টিলা এবং পাহাড়ের লাল মাটি।
ইতোমধ্যে মাটি সিন্ডিকেট নারায়ণহাট বাজারের উত্তর পাশে সরকারি খাস জমি
থেকে মাটি বিক্রি করে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রতিনিয়ত কৃষি জমির ওপর দিয়ে মাটি বহনকারী গাড়ি চলাচলের কারণে নষ্ট
হচ্ছে খেত ও ফসল। পাশাপাশি ধুলোবালিতে একাকার হচ্ছে বসতবাড়ি। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে
ভয়ভীতি দেখিয়ে থাকে সিন্ডিকেট সদস্যরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ‘কৃষি জমির টপসয়েল কেটে নেয়ার
ফলে জমি অনুর্বর হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি, নিঃসৃত কার্বনের কারণে ফসল ও গাছপালার ক্ষতি হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বালু-মাটি
পাচার রোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। অনেক গাড়ি, বালু
ও বালু তোলার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। অভিযান চলবে।
টপসয়েল ও হালদা নদীর ক্ষতি হলে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। দ্রতই ব্যবস্থা নেওয়া
হবে।’