রঙ ও বিষাক্ত কেমিক্যালে তৈরি হচ্ছে জুস!

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৫ পিএম

রঙ আর বিষাক্ত ২৫ গ্রাম কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হয় ৬শ লিটার ফ্রুটিকা জুস। এক লিটার জুস তৈরিতে খরচ মাত্র ৬ টাকা। সেই এক লিটার জুসের বিক্রি মূল্য ৮০ টাকা।
অনুসন্ধানী বিএসটিআই টিম আমের জুসে, আমের রসের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। পুরোটাই ফ্লেভার, রঙ আর কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা হয় ‘ডিএসএফ ফ্রুট্টো ম্যাঙ্গো ফুড ড্রিংকস।’ অবিকল প্রাণ কোম্পানির ফ্রুটিকার রঙের লেভেল ব্যবহার করে ও বিএসটিআইয়ের নকল লোগোযুক্ত কোমল পানির নামে বাজারজাত করে আসছিল বিষাক্ত এই জুস।
অবৈধ ও নকল এ কোম্পানির সন্ধান মেলে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের রুকনাকান্দা গ্রামে।
জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তত্ত্বাবধানে এ অভিযান পরিচালনা করেন গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা, সেনাবাহিনীর গৌরীপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ ক্যাপ্টেন সাদমান। খবর পেয়ে ছুটে আসেন বিএসটিআই ময়মনসিংহের ফিল্ড অফিসার প্রকৌশলী মাওন কুমার ধর আবীর ও পরিদর্শক প্রকৌশলী আবিদ হাসনাত।
বিএসটিআইয়ের প্রতিনিধি দল তাৎক্ষণিক প্রস্তুতকৃত জুসে বিষাক্ত কেমিক্যাল, রঙ, নকল বিএসটিআইয়ের লোগো ব্যবহারের দায়ে কোম্পানির মালিক গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার উষাতরা গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের পুত্র মো. দুলাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমার নেতৃত্বে তাৎক্ষনিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে গ্রেফতারকৃত ভেজাল জুস কোম্পানির মালিক মো. দুলাল মিয়াকে বিনাশ্রম ৩ মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেন। আদালতের নির্দেশে গ্রেফতারকৃত আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান জানান, ভেজাল ও নকল জুস উৎপাদনের দায়ে মালিককে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ছোট-বড় ১৬৮টি কার্টুন জুস জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়াও নিষিদ্ধ পলিথিন, কেমিক্যাল বিনষ্ট করা হয়েছে। ফ্যাক্টরিটি সিলগালা করে বিএসটিআইয়ের কাছে জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এলাকাবাসী জানান, এর আগেও দুলাল উদ্দিন নকল জুস কোম্পানি করেছিলেন। একাধিকবার বন্ধ করার পরেও তিনি আবারও এ ব্যবসা শুরু করেন। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করার পরেও তিনি বারবার একই ব্যবসায় ফিরে যান।
এ প্রসঙ্গে মো. দুলাল উদ্দিন যুগান্তরকে জানান, এর আগে ভোক্তা অধিকার অর্থদণ্ড করেছিল। কোম্পানি সিলগালাও করেছিল। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা করার শর্তে সিলগালা খুলে দেয়। এখন পর্যন্ত বিএসটিআইয়ের অনুমোদন পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, এ জুসে আমের কোনো রস নেই। পুরোটা কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তবে আমের ফ্লেভার দেওয়া আছে।