তারাবির সময় ৩ বছরের ছেলেকে খুন, মা আটক

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
-67c48a262a3fa.jpg)
নরসিংদীর রায়পুরায় আনাছ মিয়া নামে তিন বছরের ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মা শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারাবির নামাজের সময় উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ মির্জানগর এলাকায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর নিখোঁজ মা শিরিন আক্তারকে রোববার সকাল ৯টার দিকে আটক করেছেন এলাকাবাসী।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত শিরিন আক্তার (২৫) সৌদি প্রবাসী ডালিম মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্র জানা যায়, ৫ বছর আগে ডালিম মিয়া বিয়ে করেন একই উপজেলার হাইরমারা এলাকার শিরিন আক্তারকে। বিয়ের তিন বছর পর পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা ও জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান তিনি। এরপর শিরিন আক্তার তাদের একমাত্র সন্তান আনাছকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন।
প্রবাসে থাকা স্বামী ডালিম মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া চলে আসছিল শিরিন আক্তারের। এসব পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণেই ছেলে আনাছকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে শিরিন আক্তার। এ সময় পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে পাশের কক্ষে তারাবি নামাজ আদায় করছিলেন শিশুটির দাদি। চিৎকার শুনে ছুটে এসে তিনি নাতির রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান।
কেন মা তার সন্তানকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে এ বিষয়টি বুঝতে পারছেন না বলে জানান আনাছের দাদি। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মা শিরিন আক্তারের দেখা মেলেনি কোথাও। শিশুপুত্রকে হত্যা করে পুত্রবধূ শিরিন আক্তার পালিয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনার পর রোববার সকাল ৯টার দিকে ঘাতক মা শিরিন আক্তারকে একই ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামে রেললাইনের পাশে বসে থাকতে দেখে আটক করেন জনতা এবং ছেলেকে হত্যার কারণ জানতে চাইলে কিছু না বলে মাথানত করে রাখেন। পরে এলাকাবাসী তাকে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেন।
আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবু বক্কর জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শুনেছি মা তার সন্তানকে খুন করে পালিয়ে গেছে। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা বুঝতে পারছি না। তবে যে মায়ের কাছে তার সন্তান নিরাপদ না তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে শিরিন আক্তারের শ্বশুর ও নিহত আনাছের দাদা রহম আলী বলেন, আমার ছেলের বউয়ের মাথায় কিছু সমস্যা রয়েছে। আনাছের জন্মের পর থেকেই তার মা তাকে মারধর করত। সে কারণে আমরাই আনাছকে লালন পালন করে বড় করেছি। তার মায়ের কাছে বেশি দিতাম না। গতরাতে আমার নাতিকে আদর করে ঘুম পাড়িয়ে নামাজে যাই। পাশে বসা ছিল তার মা। পরে জানতে পারি আমার নাতিকে কুপিয়ে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। রাতে আর তাকে খোঁজে পাওয়া যাইনি। সকালে এলাকাবাসী তাকে আটক করে খবর দিলে আমরা ছুটে আসি।
রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ জানান, খবর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযুক্ত মাকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।