বালু খেকোদের ধাওয়ায় মেঘনা ছাড়ল নৌপুলিশ

কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার পাশ দিয়ে গেছে মেঘনা নদী। দীর্ঘদিন ধরেই নদীটি থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছে বালু খেকোরা। তাদের ধরতে শনিবার গভীর রাতে নদীতে যান চালিভাঙ্গা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আজমগীর হোসাইন। তবে বালু খেকোদের ধাওয়ায় নদী ছাড়তে হয়েছে তাকে।
স্থানীয়রা বলছেন, বালু খেকোরা দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও শক্তিশালী এ চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না। প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেই অপকর্ম চালাচ্ছে তারা।
নৌপুলিশ সূত্রে জানা যায়, বালু খেকোদের একটি চক্র রামপ্রসাদের চর থেকে বালু উত্তোলন করছে এমন খবরে রাত ২টা ৩০ মিনিটে সেখানে যায় নৌপুলিশের একটি দল। এর নেতৃত্ব দেন চালিভাঙ্গা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আজমগীর হোসাইন। ভোর ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের রামপ্রসাদের চর থেকে একটি বালুবাহী বাল্কহেড মেঘনা ব্রিজের দিকে আসতে থাকে। নৌপুলিশ সেটি আটকানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়।
পুলিশ সদস্যদের অবস্থান টের পেয়ে চক্রের মূল হোতা রবি ও খলিল তাদের সহযোগীদের
খবর দেন। দ্রুত নলচর এলাকা থেকে দুটি স্পিডবোট, ট্রলার ও রায়পুর থেকে তিনটি ট্রলার
নিয়ে বালু খেকোরা পুলিশের দলটিকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করে। তাদের উদ্দেশ্যে ছিল হামলা
করা। সোর্সের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন ইনচার্জ আজমগীর হোসাইন। পরে দ্রুত সেখান থেকে
নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসেন। ঘাটে ফিরে তিনি জানতে পারেন, বালু খেকোরা নদীতে তাকে করে খুঁজেছে।
আজমগীর হোসাইন বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি শঙ্কিত। নদীতে এখন বাল্কহেড ধরা ও অভিযান চালানো আমার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। যে কোনো সময় বড় ধরণের হামলার শিকার হতে পারি।’
মেঘনা উপজেলা বিএনপি মহিলা দলের সভাপতি ও নলচর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা
মাহবুবা ইসলাম মিলি বলেন, ‘বালু খেকোদের দৌরাত্ম্য দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রশাসন
একাধিকবার অভিযান চালালেও প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়ে এ চক্র বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে।
নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে রামপ্রসাদের চর এলাকার প্রায় ১০০ একর জমি নদীতে
বিলীন হয়ে গেছে। এতে তীরবর্তী এলাকা ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।’