Logo
Logo
×

সারাদেশ

রিকশাচালককে জুতা ও লাঠিপেটা করলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম

রিকশাচালককে জুতা ও লাঠিপেটা করলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা

রাজশাহীর পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসান রাসেল একজন রিকশাচালককে জুতা ও লাঠিপেটা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পায়ের জুতা খুলে রিকশাচালককে পিটিয়েও তার ক্ষোভ মেটেনি। গাড়ির ব্যাকডালা (পেছনের অংশ) থেকে লাঠি বের করে তিনি ওই রিকশাচালককে লাঠিপেটাও করেন।

শুক্রবার ঘটনাটির সিসি টিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। তবে ঘটনাটি গত ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ঘটেছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একটি রিকশায় চড়ে জাহিদ হাসান বাসার সামনে নামেন এবং ৩০ টাকা ভাড়া দেন। তখন ওই রিকশাচালক তাকে বলেন, ‘বলে উঠবেন’ (ভাড়া ঠিক করে)। এ সময় জাহিদ হাসান বলেন, ‘বলে উঠবোনি, কিন্তু ভাড়া ৩০ টাকার বেশি কেউ চায় না।’ এ সময় রিকশাচালক কিছু একটা বলেন। তখন পেছনে ঘুরে এসে জাহিদ হাসান বলেন, ‘...আরেকবার বলতেছো কেন? আরেকবার বল।’ এরপরই তিনি পায়ের জুতা খুলে রিকশাচালকের মাথায় ও গালে মারতে থাকেন।’ হতবিহ্বল রিকশাচালক রিকশার ওপরেই বসে থাকেন।

জাহিদ হাসান এ সময় জুতা পরে নিয়ে পাশেই রাখা তার প্রাইভেটকারের দিকে যান। গাড়ির ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে রিকশাচালককে মারতে থাকেন। কয়েকটি আঘাত রিকশায় লাগে। এ সময় তিনি বলতে থাকেন, ‘আগা, আগা (চলে যা)। তখন রিকশাচালক রিকশা নিয়ে দ্রুত চলে যান।'

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে শুক্রবার বেশ কয়েকবার সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসানের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে পবা উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে খোলা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জাহিদ হাসান নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।

সেখানে জাহিদ হাসান লেখেন- আমি জাজেস কোয়ার্টার ফাল্গুনির তিন তলায় থাকি। রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর থেকে বাসার গেটে এসে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়েছি। সে আরও ১০০ টাকা লুঙ্গি কিনতে চায়। আমি তাকে নাই বলে নিষেধ করি। সে বার বার বলে। শেষে ভাড়া দিয়ে নেমে আসার সময় আমাকে ছোট ছোট করে লাট সাহেব বলে গালি দিলে আমি পরবর্তী ঘটনা ঘটাই; যা আমি অত্যন্ত অন্যায় করেছি। পরবর্তীতে আমি রিকশায় বেত দিয়ে আঘাত করি। তারপরও সে ভয় পাই নাই।

জাহিদ হাসানের স্ত্রী রাজশাহীর একজন বিচারক। নগরীর রাজপাড়া থানা এলাকার ওই কোয়ার্টারে বিচারকেরা পরিবারসহ থাকেন। ওই ঘটনার ফুটেজ একজন বিচারক তার ব্যক্তিগত সিসি ক্যামেরা থেকে ফাঁস করেছেন বলে জাহিদ হাসান দাবি করেন।

তিনি লেখেন- ঘটনার ফুটেজ ওই বিচারক সমাজসেবা অধিদপ্তরকে দিয়েছিলেন; কিন্তু বিষয়টি ব্যক্তিগত ইস্যু বলে ‘ডিপার্টমেন্ট’ এগোয়নি। ওই বিচারক এটি ভাইরাল করেন বলে জাহিদ হাসান দাবি করেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) আরাফাত আমিন আজিজ বলেন, বিষয়টা অবশ্যই দুঃখজনক। সমাজসেবা অফিস অন্য ডিপার্টমেন্টে। তারপরও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ রকম কোনো বিষয় তার জানা নেই। রিকশাচালক কোনো অভিযোগ করেননি।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরা খাতুন বলেন, ভিডিওটা একটু আগেই দেখলাম। বিষয়টা নিয়ে জাহিদ হাসানের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এখনো কথা বলিনি।

এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখি, আগে কথা বলি। আমাদের বিভাগীয় পরিচালক স্যারও আছেন। আলাপ করে দেখি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম