মধ্যরাত থেকে পদ্মা-মেঘনায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষেধ

চাঁদপুর ও মতলব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪২ পিএম

চাঁদপুর মতলবের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাটকার নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিতে দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে আগামী মার্চ-এপ্রিল দুই মাস সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ৩০ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে আবার মাছ ধরা শুরু হবে।
এদিকে অভয়াশ্রম বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স। দুই মাস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী।
অপরদিকে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেরা পাবেন খাদ্য সহায়তার চাল। তবে সরকারি খাদ্য সহায়তা অপ্রতুল বলে দাবি জেলেদের।
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও নদীতে জাটকার নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিতে ২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নদীতে সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করে সরকার। নিষেধাজ্ঞার এই সময় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভেরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় জাল ফেলা, মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও পরিবহণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
সূত্রে জানা যায়, অভয়াশ্রম বাস্তবায়নে নিবন্ধিত ৪০ হাজার জেলেকে চার কিস্তিতে ১৬০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে ধরা পড়লে কমপক্ষে এক বছর থেকে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।
মতলব উত্তর উপজেলার মালপাড়ার জেলে ইমরান, গণেশ, লালমোহন জানান, সরকার দুই মাস মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা দিছে। সেই আদেশ আমরা মানব। ইতোমধ্যে নৌকা-জাল ওপরে উঠানোর প্রস্তুতি চলছে। সরকারের কাছে সবসময় দাবি থাকে, যাতে চালের সঙ্গে আর্থিক সহায়তা করে। কারণ চালের সঙ্গে রান্না করতে তেল নুন, তরকারিসহ আনুষঙ্গিক জিনিসের দরকার হয়।
জেলেরা আরও বলেন, অধিকাংশ জেলে ধারদেনা ও কিস্তিতে জর্জরিত। এ সময়ে কিস্তি বন্ধ থাকলে আমরা উপকৃত হব। প্রশাসন যদি কিস্তি বন্ধ রাখে আমাদের চাপ কমে আসবে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস জানান, জাটকা রক্ষায় জেলে পাড়াগুলোতে প্রচার-প্রচারণা সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া তাদের জন্য নির্ধারিত ভিজিএফের চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের মতোই জাটকা রক্ষা অভিযান কঠোর হবে। অভয়াশ্রমে অসাধু জেলেরা যাতে কোনোভাবেই নদীতে নামতে না পারে সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসনসহ মৎস্য বিভাগ।
চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, চাঁদপুর নৌ সীমানার মধ্যে জেলেদের সঙ্গে সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। এরপরও যদি কোনো জেলে আইন অমান্য করে নদীতে নেমে জাটকা নিধন করে, তাদের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।