কুমিল্লায় লেবু শসার দাম পাঁচগুণ, বোতলজাত সয়াবিন তেল উধাও

আবুল খায়ের, কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫২ পিএম

কুমিল্লায় দুই দিনের ব্যবধানে লেবু-শসার দাম বেড়েছে পাঁচগুণ। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বিক্রেতারা এসব পণ্য মজুত করে প্রায় পাঁচগুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ ভোক্তাদের। এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সয়াবিন তেলের বোতল বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে।
দোকানিরা ভোজ্যতেল নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রতি বোতলে (৫ লিটার) কমপক্ষে ১৫০-২শ টাকা বেশি হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে ভোক্তা সাধারণ রমজানের পণ্য কিনতে এসে চরম বিপাকে পড়েছেন। অপরদিকে বাজারে ব্যবসায়ী চক্রের এমন নৈরাজ্য ঠেকাতে প্রশাসনের তেমন কোনো নজরদারি চোখে পড়েনি। যার ফলে অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন।
সরেজমিন নগরীর নিউমার্কেট, বাদশা মিয়ার বাজার, রানীর বাজার, রাজগঞ্জ, চকবাজারসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, লেবু প্রতি হালি ১৫০-১৭০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ দুই দিন আগেও ৩০-৪০ টাকা হালি ছিল। এসব বাজারে দেশি শসা ২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ দুই-তিন দিন আগে শসা ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।
বাজার সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, কাঁচামাল বিক্রেতাদের সিন্ডিকেট গত এক সপ্তাহ ধরে লেবু এবং শসা মজুত করে আসছিল। রমজানের একদিন আগে বিক্রির জন্য এসব লেবু এবং শসা মজুত করা হয়। অল্প দামে ক্রয় করে তারা রমজানের অতি প্রয়োজনীয় এসব পণ্য প্রায় পাঁচগুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন।
রাজগঞ্জ বাজারের ক্রেতা জাকির হোসেন জানান, দুই দিন আগেও লেবু প্রতি হালি ৩০-৪০ টাকা এবং শসা প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে; কিন্তু শুক্রবার বাজারগুলোতে লেবু ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় হালি এবং শসা ২শ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
নিউমার্কেটের ক্রেতা আরিফ হোসেন জানান, বাজারে লেবু এবং শসার দাম পাঁচগুণ বৃদ্ধি করেছেন বিক্রেতারা। মূলত সিন্ডিকেট করেই এসব করা হচ্ছে। বাজারে প্রশাসনের তেমন কোনো নজরদারি আমাদের চোখে পড়েনি।
রাজগঞ্জ বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা আলেক মিয়া বলেন, আমরা পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে ক্রয় করেছি। তাই লেবু শসা একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে ভোজ্যতেল নিয়ে বাজারে চলছে তুঘলকি কাণ্ড। কোনো মুদি দোকানে গিয়ে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করলে গুদাম থেকে দুই-এক বোতল করে বের করে দিচ্ছেন।
চকবাজারের নিহার স্টোরের মালিক সুনীল সাহা বলেন, সয়াবিন তেল কোম্পানিগুলো বোতলজাত তেল সঠিকভাবে সরবরাহ করছে না। বাজারে চাহিদার পাঁচভাগের একভাগ তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। কোম্পানিগুলো বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। এখানে রিটেল পর্যায়ের বিক্রেতাদের কোনো দোষ নেই।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অতিরিক্ত মূল্য আদায়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজারে আমাদের ভিজিল্যান্স টিম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মনিটরিং করছেন। যারা অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।