Logo
Logo
×

সারাদেশ

আবরার হত্যা মামলার ৭ আসামিকে নিয়ে যা বললেন ছোট ভাই ফাইয়াজ

Icon

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

আবরার হত্যা মামলার ৭ আসামিকে নিয়ে যা বললেন ছোট ভাই ফাইয়াজ

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

আলোচিত এ হত্যা মামলা নিয়ে নিহত আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন একটি পোস্ট দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে মামলার নানা বিষয়ে ফেসবুক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন।

তার ফেসবুক পোস্টটি তুলে ধরা হলো-

‘আসামিপক্ষের আইনজীবী সংক্রান্ত বিষয়টি আব্বুর থেকে জানতে পারি গত ২৪ তারিখে। তবে আদালতের শুনানি শেষ হয়ে যাওয়ায় এ বিষয়ে কথা বলে কোনো লাভ ছিল না। আবার যে দুই দল আবরার ফাহাদের বিষয়ে সম্পূর্ণ ঐক্যবদ্ধ ছিল, তারাই এ ঘটনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে রাজনীতি করুক এমনটাও চাই না বলে এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলাম; কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখলাম, এ সুযোগে যেই সাত আসামির পক্ষে উক্ত আইনজীবী লড়ছেন, তাদেরই রীতিমতো নির্দোষ বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাকেই দেখলাম বেশ কয়েকজন মেসেজ দিয়ে বুঝাচ্ছেন যে, সেই সাতজনকে অতিরিক্ত শাস্তি দেওয়া হয়েছে! তো এখানে কয়েকটা পয়েন্ট নিয়ে কথা বলা উচিত:

প্রথমেই যে কথাটা আসে যে, আওয়ামী লীগ সরকার নাকি জনতুষ্টির জন্য রায় দিয়েছে। অথচ ঘটনা পুরোই উলটো। শেষ মুহূর্তে গিয়ে বেশ কয়েকজনের সাজা কমানোর জন্য স্বয়ং তৎকালীন আইনমন্ত্রী চেষ্টা করেছেন। আসামির পরিবার ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রীকে ম্যানেজ করা গেলেও বিচারকের দৃঢ়তার কারণে সুবিধা করতে পারেননি।

২. যেই সাতজনের পক্ষে উনি: (যাদের কথা টেনে ডিফেন্ড করা হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে কিছু অভিযোগ যুক্ত) 

(র) মেহেদী হাসান রাসেল: তৎকালীন বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। যে সরাসরি লাশ গুম আর ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

(রর) মেহেদী হাসান রবিন: আবরার ফাহাদকে টার্গেটের মূল হোতা। যে ৩ অক্টোবরের মিটিংয়ে নির্দেশ দেয় আবরার ফাহাদকে গেস্টরুমে আনতে। ভাইয়ার রুমমেট মিজান এই রবিনকেই জানায় যে ভাইয়াকে শিবির মনে হয় তার।

(ররর) অমিত সাহা : যে সেদিন রাতে উপস্থিত ছিল না; কিন্তু ৫ ঘণ্টা মারার পরে ২০১১ থেকে ২০০৫ সালে নিয়ে যাওয়ার পরে অবস্থা দেখে মেসেঞ্জারে নির্দেশ দিয়েছিল যে, ওরে আরও দুই ঘণ্টা মারা যাবে। (উনার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আছে)

(রা) মাহমুদ সেতু: খুব সম্ভবত এর কথা দিয়েই বলা হচ্ছে যে, জানালা দিয়ে উঁকি দেওয়ায় ফাঁসির রায় হয়েছে। কথা ভুল না, তবে অসম্পূর্ণ। উঁকি দেওয়ার পরে যারা মারতেছিল, তারা তাকে জিজ্ঞেস করেছিল যে, ভাই কিছু তো স্বীকার করে না। তখন সে বলেছিল, তাইলে আরও মারতে থাকো। শামীম বিল্লাহ, নাজমুস সাদাত, হোসেন মোহাম্মদ ত্বোহা।

৩. দেখেন, আমরা কোনোভাবেই চাই না যে কোনো নির্দোষ শাস্তি পাক। আমরা চাই ন্যায়বিচার। তবে একটা বিষয় কী, এই হত্যাকাণ্ডের দায় কী শুধুই ২৫ জনের ওপরে ছিল? অবশ্যই না। যেই মাত্রার অপরাধে এদের শাস্তি হয়েছে বলে আপনারা মনে করছেন, তা সত্যি হলে শতাধিক আসামি হতো।

৪. কিন্তু এই যে একজন আইনজীবী ও তার রাজনৈতিক সমর্থকদের ব্যবহার করে যে পুরো বিচার প্রক্রিয়া নিয়েই জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করা হলো, এর দায় কারা নেবে? একজন আইনজীবী তার পছন্দ মতো যে কোনো মামলা নিতেই পারে। এখানে আমার কোনোই আপত্তি নেই। কিন্তু সে যাদের মামলা নিয়েছে তারা নির্দোষ এটা কিসের আলাপ ভাই! উনি আদালতে অনেক চেষ্টা করেও যে ক্ষতিটা করতে পারেননি, সেটা আপনাদের ‘উনি যাদের মামলা নিয়েছেন তারা অতটাও দোষী না- প্রমাণের চেষ্টার মাধ্যমে হচ্ছে।’

এদিকে বিকাল ৫টা মিনিটে আরেকটি ফেসবুক পোস্টে আবরার ফাইয়াজ উল্লেখ করেন- ‘আইনজীবী শিশির মনির ভাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং উনার পোস্টের বিষয়েও অবগত করেছেন। খুব বেশি হলে ১০-১২ দিনের মধ্যেই হয়তো উচ্চ আদালতের রায় আসবে। এখন আর কে দোষী আর কে নির্দোষ, সেই বিতর্ক করে দয়া করে আসামিদের বিচার প্রভাবিত করার সুযোগ করে দিয়েন না।’

প্রসঙ্গত, আবরার ফাইয়াজ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। তাদের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম