‘সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ছিল চট্টগ্রাম বন্দর’
লাইটারকে ভাসমান গুদাম বানাতে দেওয়া হবে না: বন্দর চেয়ারম্যান

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১০ পিএম

গত সরকারের আমলে চট্টগ্রাম বন্দর নানা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ছিল বলে অভিযোগ করেছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, এ সিন্ডিকেট ভাঙতে আমরা সফল হয়েছি। বন্দরের খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। তিনি আরও বলেন, লাইটারকে আর ভাসমান গুদাম বানিয়ে বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না। পণ্য আসার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খালাস করতে হবে। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের সম্পদ। এটিকে জনবান্ধব করতে চাই। যাতে সবাই সমানভাবে ব্যবহার করতে পারে, এর সুফল পায়। এজন্য কাজ করতে হবে স্বচ্ছতা, ন্যায় ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে। এটা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারলেই জনগণ ভালো থাকবে। দায়িত্ব গ্রহণের পর চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন সেসব তুলে ধরে তিনি বলেন, পণ্য পরিবহণ নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া হবে। ভোজ্যতেলের হাহাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই মাসে (জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি) ৩ লাখ ৪২ হাজার ৫২৭ টন ভোজ্যতেল এসেছে। যা গত বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি।
বন্দর চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পুরো দেশে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করে। ভেঙে পড়ে সব সিস্টেম। এমন মুহূর্তে ১১ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান হিসাবে তাকে দায়িত্ব দেয় সরকার। এ রকম একটি অস্থির সময়ে দায়িত্ব নিয়ে আমাকে অপারেশন ও বন্দরের নিরাপত্তার মতো দুটো বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এ সময় কার্যত কোনো পণ্য পরিবহণ হয়নি। এছাড়া জাহাজের ওয়েটিং টাইম বেড়ে যায় এবং পণ্য খালাস করতে দেরি হয়। চট্টগ্রাম ও ঢাকা আইসিডির ৫০ হাজার কনটেইনার জমা হয়ে যায়। বর্তমানে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চলছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, আগে জাহাজ বন্দরে আসার পর প্রায় আট দিন অপেক্ষা করতে হতো। এখন আর আগের মতো বহির্নোঙরে অপেক্ষা করতে হয় না। বর্তমানে গিয়ারলেস ও গিয়ারড ভেসেল সমন্বয় করে শতভাগ জেটি বা বার্থ ব্যবহার করা হচ্ছে। যাতে যে কোনো জাহাজ এলে সহজে ভিড়তে পারে। আগে তুলনামূলকভাবে ছোট জাহাজ আসত। একটা জাহাজে ৮০০-১২০০ কনটেইনার বহন করত। এখন আমরা আমদানিকারকগণকে সিসি অ্যাগ্রিমেন্টের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সক্ষমতার জাহাজ আনতে উদ্বুদ্ধ করছি। ফলে বড় জাহাজে অনেক বেশি কার্গো আসে। এজন্য জাহাজের সংখ্যা কমছে, ক্যাপাসিটি বেড়েছে। খরচ কমেছে, ব্যবস্থাপনায় গতি পেয়েছে।
রমজানে পণ্যের সরবরাহ চেইন নির্বিঘ্ন রাখাসহ চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম ও অগ্রগতি সম্পর্কে জানাতে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।