Logo
Logo
×

সারাদেশ

আন্দোলনে গুলিতে স্কুলছাত্র নিহত, হাসিনাসহ ৩৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫২ পিএম

আন্দোলনে গুলিতে স্কুলছাত্র নিহত, হাসিনাসহ ৩৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে স্কুলছাত্র জুনাইদ ইসলাম রাতুল (১৪) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে ৩৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জপাড়া ঘোনপাড়ার জিয়াউর রহমান গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকালে সদর থানায় এ মামলা করেন।

পুলিশ মঙ্গলবার রাতে শহরের চারমাথা এলাকা থেকে অন্যতম আসামি মঞ্জু সরকারকে গ্রেফতার করেছে। সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) একেএম মঈন উদ্দিন জানান, অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান, কেন্দ্রীয় যুবলীগ সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বিপ্লব কুমার, ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপু, যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, সহ-সভাপতি টি জামান নিকেতা, শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হাসান ববি, জেলা যুবলীগ সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাগর কুমার রায়,  শ্রমিক লীগ নেতা সামছুদ্দিন শেখ হেলাল, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক একেএম আসাদুর রহমান দুলু, আওয়ামী লীগের অর্থদাতা মঞ্জু সরকার, সাজেদুর রহমান শাহীন, অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম দুলু, মো. নুরুজ্জামান, মাহফুজুল আলম জয়, মাসদুদুল আলম খোকন, মশিউল আলম দীপন, উদয় কুমার বর্মণ, জাকারিয়া আদিল, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয়, আল রাজী জুয়েল, মাশরাফি হিরো, আলহাজ্ব শেখ, কামরুল হুদা উজ্জ্বল, সৈয়দ সাত্ত্বিক, রবিউল ইসলাম লিটন, সেতু ইসলাম প্রমুখ।

বাদী জিয়াউর রহমান এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বেগবান করতে গত বছরের ৫ আগস্ট বিকাল ৪টার দিকে তার ছেলে জুনাইদ ইসলাম রাতুল ও জামাতা আমির হামজা ছাত্র-জনতার সঙ্গে শহরের দিকে যান। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের থানা মোড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। এ সময় আসামিরা ককটেল, হাতবোমা, রিভলবার, কাটা রাইফেল, পেট্রলবোমা, চায়নিজ কুড়াল, লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। আসামি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন শটগান দিয়ে রাতুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে। এতে পিঠ, মাথা, চোখ ও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লেগে রক্তাক্ত জখম হয়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসকদের পরামর্শে ৬ আগস্ট দুপুরে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল সোয়া ৭টার দিকে রাতুলের মৃত্যু হয়। মরদেহ বাড়িতে এনে দাফন করা হয়েছে। সন্তানের মৃত্যুতে পুরো পরিবার মর্মাহত থাকায় ও সাক্ষীদের কাছে ঘটনার বিস্তারিত শুনে আসামিদের নাম সংগ্রহ করা হয়। এরপর আত্মীয়-স্বজনের পরামর্শে মামলা করতে বিলম্ব হয়।

বাদী জিয়াউর রহমান এজাহার গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক আসামিরা দাবি করেন, তারা ঘটনার সময় কেউ সেখানে ছিলেন না। সন্ত্রাসীরা সদর থানায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় জানমাল রক্ষায় পুলিশ থানার সামনে থেকে গুলি করলে স্কুলছাত্র রাতুল আহত হয়েছিল। অজ্ঞাত কারণে তাদের এ মামলায় আসামি করে হয়রানি করা হচ্ছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম