সরকারি অফিসে গিয়ে হাজির ‘মৃত’ ব্যক্তি!

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের ১ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুরিয়া বেগম। স্বামী হারা এ নারীর জীবন চলে ভিক্ষা করে। বিধবা পেতেন এ বৃদ্ধা, যা আসতো মোবাইল ফোনে। তবে হঠাৎ করেই তার ফোনে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় এক বছরের মতো ভাতা না পেয়ে মাসখানেক আগে যান উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে। সরকারি এ অফিসে গিয়ে তার মাথায় হাত। কারণ, সরকারি খাতায় তিনি মৃত। যার জন্য বন্ধ হয়ে গেছে বিধবা ভাতা।
একই অবস্থা বহরমপুর ইউনিয়নের ১ নাম্বার ওয়ার্ডের ইদ্রিস হাওলাদারের।
বয়স্ক ভাতা পাওয়া এ বৃদ্ধও সরকারি কাগজে কলমে মৃত। এ জন্য ভাতা পাচ্ছেন না তিনিও। শুধু
এ দুজন নয়, উপজেলার অনেকের ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি কাগজে কলমে তদেরও মৃত দেখানো
হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভুলে তারা সরকারি কাগজে
মৃত হয়ে গেছেন। বিষয়টি স্বীকার করলেও অনেক জনপ্রতিনিধি দায় নিতে নারাজ। তারা দায় দিচ্ছেন
চৌকিদারকে।
সুরিয়া বেগম বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি সদস্য জলিল ও চৌকিদার মানিক সমাজসেবা
অফিসে ভুল তথ্য দিয়ে আমাকে মৃত দেখিয়েছে। সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারি, আমি মারা
গেছি। অনেক দিন ধরে আমি ভাতা পাই না। আমি ভিক্ষা করে জীবন চালাই। ভাতা বন্ধ হওয়ায় খুব
কষ্টে আছি। ’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দশমিনা উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে কিছু
কিছু ইউপি সদস্যের ভুলে প্রায়শ জীবিত ভাতা
ভোগীরা সরকারি কাগজে মৃত হয়ে যাচ্ছে। এতে করে
ভোগান্তিতে পড়ছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের অভিযোগ,
অনৈতিক সুবিধা ও ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে ইউপি সদ্যরা এমনটি করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য মো. জলিল বলেন, ‘চৌকিদার ভুল তথ্য দিয়ে এরকমটা
করেছে। বিষয়টি সমাধান করে দেওয়া হবে।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘পূর্বে এমন ঘটনা
ঘটলেও আমি যোগদানের পর এমন ঘটনা ঘটছে না। যাদের
মৃত দেখানো হয়েছে তারা আবেদন করলে তা সংশোধন করে দেওয়া হবে।’