ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়, হুমকিতে পরিবেশ

নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:০৬ পিএম

ফরিদপুরের নগরকান্দায় পরিবেশ আইন অমান্য করে ফসলি জমির মাটি কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটায়। এতে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশের ভারসাম্য। মাটি বহনকারী ট্রলিগাড়িতে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা। বিষয়টি জেনেও নিশ্চুপ প্রশাসনও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরকান্দায় থামছেই না মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য।
টাকার লোভ দেখিয়ে ফসলি জমির মাটি কিনে অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছে।
ফসলি জমিতে বাড়ি নির্মাণেও ব্যবহৃত হচ্ছে এ মাটি। স্থানীয় প্রভাবশালীদের হাত করে এ
কাজ করে যাচ্ছে মাটি ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার নগরকান্দা-ফরিদপুর সড়কের কালীবাড়ি বাজার, লস্করদিয়া, ঝপরখালী
মোড়, হাসনহাটি, নতুনবাজার, তালমা, শাকপালদিয়া এলাকার বিভিন্ন স্থানের ফসলি জমি থেকে
মাটি কাটা হচ্ছে। এসব মাটি নেওয়া গ্রামীণ রাস্তায়। এতে করে রাস্তাগুলো হচ্ছে নষ্ট।
স্থানীয়রা জানান, নগরকান্দা উপজেলার প্রায় সব জায়গাতেই অবাধে চলছে অবৈধ
ভেকু ও ট্রলিগাড়ী। এতে এলাকার মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সকাল থেকে শুরু হয়ে গভীর
রাত পর্যন্ত চলছে ভেকু ও ট্রলি গাড়ি। ট্রলির সাহায্যে মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। ট্রলির মাটি সড়কের ওপর পড়ে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা। সামান্য
বৃষ্টি হলেই সড়ক পিচ্ছিল হয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা।
সারাদিন ভেকু ও ট্রলি চলতে থাকায় ধুলোবালিতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। ভেকু ও ট্রলি গাড়ির শব্দে এলাকায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কিন্তু এলাকার সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে অভিযোগ করলেও, অদৃশ্য কোনো কারণে সমাধান পাচ্ছে না তারা।
লস্করদিয়া ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামের আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘মাটিবোঝাই ট্রলিগাড়ি
চলাচল করছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরা বাধা দিলেও মাটি ব্যবসায়ীরা কিছুতেই থামছে না। মাটিবোঝাই
ট্রলিগাড়ি চলাচল করায় এলাকার কাঁচা ও পাকা রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। ’
লস্করদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বাবুল তালুকদার বলেন,
‘মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। ট্রলিগাড়ি চলাচল করায় রাস্তা নষ্ট
হচ্ছে। ‘
নগরকান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার তিলক কুমার ঘোষ বলেন, ‘ফসল জমির মাটি কাটার
কারণে কৃষিজ উৎপাদন কমে যাচ্ছে। কমছে ফসলি জমিও। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা এ ব্যাপারে
সচেতন করার চেষ্টা করছি। কিন্তু কেউ আইন অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার
ক্ষমতা আমাদের নেই।’
নগরকান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘অবৈধভাবে মাটি কাটলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’