পরকীয়া প্রেমিকাকে কুপিয়ে চোখ, হাত বিচ্ছিন্ন করে খুন

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫০ পিএম

কেরানীগঞ্জে পরকীয়া প্রেমিকের হাতে সীমা বেগম (৩৫) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আগানগর ছোট মসজিদ এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসায় পরকীয়া প্রেমিকাকে কুপিয়ে চোখ, হাত বিচ্ছিন্ন করেন ইমাম হোসেন (২০)।
গুরুতর জখম অবস্থায় সীমা বেগমকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী ইমাম হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
ছোট মসজিদ এলাকার নাজির উদ্দিনের বাড়ির নিচতলায় ভাড়া দেওয়া দুই রুমের ফ্ল্যাটের এক রুমে দরজা বন্ধ করে সীমাকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে চোখ, হাত বিচ্ছিন্ন করে দেয় ইমাম হোসেন। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করা হয়।
বাড়ির মালিকের ছেলে রাকিব হোসেন এসব তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, যে রুমে এ ঘটনা ঘটেছে সেই রুম ভাড়া নিয়ে ইমাম হোসেনের মামা শাহীন পরিবার নিয়ে থাকেন। ফ্ল্যাটের অন্য রুমে আরেকটি পরিবার থাকে। সম্প্রতি ইমাম হোসেন গ্রামের বাড়ি ভোলা থেকে মামা শাহীনের বাসায় উঠেছেন। গতকাল শাহীন সপরিবারে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছেন। ভাগ্নে ইমাম হোসেনকে বাসায় একা রেখে যান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার কিছু আগে ইমাম হোসেন ও নিহত নারী বাইরে থেকে ফ্ল্যাটে এসে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। এর কিছু সময় পর ভিকটিমের চিৎকার শুনে এগিয়ে গেলেও ভেতর থেকে দরজা বন্ধ থাকায় তারা কিছুই করতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর হাতে বঁটি নিয়ে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসে। উপস্থিত সবাইকে ভয় দেখিয়ে সরে যেতে বলে। এরপর সে বটি ফেলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে; কিন্তু এলাকাবাসী তাকে ধরে ফেলেন। পরে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।
এদিকে ঘটনার পরপরই সীমা বেগমের স্বামী আক্তার হোসেন ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আটকের পর ইমাম হোসেন জানান, ওই নারী তাকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করত। এজন্য তাকে তিনি নৃশংসভাবে কুপিয়েছেন।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ইমাম হোসেনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ভিকটিমের সঙ্গে ইমাম হোসেনের ‘রিলেশন’ ছিল। তিনি ক্ষোভ থেকে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। পুরো ঘটনা তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ওসি আরও জানান, ইমাম হোসেনের বাড়ি ভোলা জেলায়। সেখানকার একটি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকায় এসেছেন স্নাতকে ভর্তি হতে।