Logo
Logo
×

সারাদেশ

সূর্যমুখীর হাসিতে বদলে গেল ময়লার ভাগাড়

Icon

কে এম রায়হান কবীর, শরীয়তপুর

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম

সূর্যমুখীর হাসিতে বদলে গেল ময়লার ভাগাড়

সবুজের মাঝে এ যেন হলুদের রঙছটা। প্রকৃতিতে সামান্য বাতাসেই হেলেদুলে নেচে যাচ্ছে হাজারও সূর্যমুখী। তবে এটি কোনো ফসলের মাঠ নয়, পুরোনো একটি ময়লার ভাগাড় আর ঝোপঝাড় সরিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্রে করা হয়েছে সূর্যমুখীর আবাদ।

আর সূর্যমুখী ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে কেউ আসছেন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আবার কেউ আসছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। অনেকে তো আবার হাজির হয়েছেন ফটোগ্রাফার নিয়েও। তাই সময়ক্ষেপণ না করে সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে কাটানো সুন্দর মুহূর্তগুলো করে ফেলছেন ফ্রেমবন্দি।

পৌরসভা সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, শরীয়তপুর পৌরসভার মূল গেটে শহরের প্রধান সড়ক লাগোয়া স্থানটি ছিল পৌরসভার সেকেন্ডারি ডাম্পিং জোন। এখানে শহরের বাসাবাড়ির ময়লার স্তূপ করে রাখার পর পরবর্তীতে পৌরসভার গাড়ির মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হতো প্রধান ডাম্পিং জোনে। বছরের পর বছর ধরে জায়গাটিতে রাখা ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে পৌরসভায় প্রবেশ কিংবা প্রধান সড়ক দিয়ে যাওয়া মুশকিল ছিল পথচারীদের।

কয়েক মাস আগে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পিংকি সাহাকে পৌর প্রশাসক নিযুক্ত করা হলে তিনি উদ্যোগ নিয়ে ময়লার ডাম্পিং জোনকে সরিয়ে গড়ে তুলেন গ্রিন স্পেস। প্রায় ৪৪ শতক জমিতে আবাদের পরিকল্পনা নেন সূর্যমুখীর। নিবিড় পরিচর্যার ফলে ফোটা শুরু হয় সূর্যমুখী ফুল।

শহরের প্রাণকেন্দ্রে এমন সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্যে প্রতিনিয়ত সকাল-বিকাল ভিড় করছেন নানা বয়সি শ্রেণি-পেশার মানুষ। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা।

রোজানা ইসলাম রোজী নামের এক দর্শনার্থী বলেন, পৌরসভার সামনে দিয়ে একটা সময় হেঁটে যাওয়া যেত না ময়লার দুর্গন্ধে। শহরের মধ্যে এত সুন্দর একটা পরিকল্পনা নিয়ে ময়লা সরিয়ে সূর্যমুখী আবাদ করা যায়, যা আমরা চিন্তাও করিনি। বর্তমানে জায়গাটি একটি বিনোদন কেন্দ্রের মত হয়ে উঠেছে। সবাই আসে, ঘুরে ছবি তুলে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগে আমরা সবাই খুব খুশি।

সৌরভ নামের আরেক যুবক বলেন, পৌরসভার এই জায়গাটি ময়লা আবর্জনা পড়েছিল। পৌরসভা উদ্যোগ নিয়ে সেই ময়লা আবর্জনা সরিয়ে সুন্দর সূর্যমুখীর আবাদ করেছে। এই সূর্যমুখী থেকে তেলও পাওয়া যাবে আবার আমরা সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছি। অনেকের পরিত্যক্ত জায়গা রয়েছে, পৌরসভার এমন উদ্যোগ দেখে তারাও এ উদ্যোগ নিতে পারে।

আয়েশা নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, কয়েক দিন ধরে এদিক দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি অনেক সুন্দর সূর্যমুখী ফুল ফুটেছে। আজ আমি আমার বন্ধুদের নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছি। ফুলের সঙ্গে ছবি তুলে বেশ ভালো লাগল। আমরা চাই আগামীতেও এখানে সূর্যমুখীর চাষ করা হোক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন বলেন, সূর্যমুখী তেল মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। অন্যান্য তেলের পাশাপাশি এই সূর্যমুখী তেলও আমাদের কাজে আসে। তাই আমরা সব সময় কৃষকদের সূর্যমুখী আবাদ করার পরামর্শ দেই।

এ ব্যাপারে জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসক পিংকি সাহা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জায়গাটি সেকেন্ডারি ডাম্পিং জোন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। পৌরসভা যেহেতু একটি নাগরিক সেবাকেন্দ্র তাই আমি প্রথমেই জায়গাটিকে গ্রিন স্পেস হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেই। পরবর্তীতে সূর্যমুখী আবাদ এবং নিবিড় পরিচর্যা করা হয়। বর্তমানে খুব সুন্দর ফুল ফুটেছে। আমাদের পৌরবাসীসহ অন্যরা এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন। পৌরবাসীর জন্য বিনোদনের সুযোগ করতে পারায় আমরা অনেক খুশি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম