Logo
Logo
×

সারাদেশ

বিয়েবাড়িতে সাউন্ডবক্স না বাজানোর অনুরোধ করতে গিয়ে যা হলো

Icon

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫০ পিএম

বিয়েবাড়িতে সাউন্ডবক্স না বাজানোর অনুরোধ করতে গিয়ে যা হলো

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বিয়েবাড়িতে বেশি ভলিউমে সাউন্ডবক্স না বাজানোর অনুরোধ করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন আব্দুল আওয়াল। এরপর তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে বাসরঘর ভাঙচুরের অসত্য অভিযোগে জুতাপেটা ও ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করার ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের জয়ন্তীপুর বাজারের শেডঘরে এক সালিশি বৈঠকে এ দণ্ড দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে দণ্ডিত আব্দুল আওয়াল পরিবারের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় বিনাদোষে শাস্তি মেনে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে জয়ন্তীপুর গ্রামের মিন্টুর ছেলে আরাফাতের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। ওই অনুষ্ঠানে সাউন্ডবক্সে জোরে জোরে গান বাজানো হচ্ছিল। প্রতিবেশী আব্দুল আওয়াল এর প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে তার বিরুদ্ধে বাসরঘর ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জয়ন্তীপুর শেডঘরে সামাজিকভাবে সালিশ বসে। সালিশে মিন্টু আলী শাহের ছেলে আরাফাত শাহ অভিযোগ করেন, বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে সাউন্ডবক্সে গান বাজছিল। এ সময় তার চাচা আব্দুল আওয়াল শাহ ও তার ছেলেরা বাড়িতে এসে জোরে গান বাজানো নিয়ে চিল্লাপাল্লা করতে থাকেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তার বাসরঘর ভাঙচুর করেন।

এ সময় বাড়ির লোকজনকে মারধর করা হয়। পরে বৈঠকে জোরে গান বাজানোর নিন্দা জানিয়ে বাসরঘর ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় শাস্তি স্বরূপ আব্দুল আওয়াল শাহকে ৫টি জুতার বাড়ি ও ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অপরাধ স্বীকার করে উপস্থিত সবার সামনে ক্ষমা চাওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। পরে সেখানে আব্দুল আওয়াল শাহের বড় ভাই হাবিবুর রহমানকে দিয়ে জুতার বাড়ি দেওয়ার শাস্তি কার্যকর করানো হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল, গ্রামপ্রধান আবদুর রব, আব্দুল হকসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সালিশে উপস্থিত ছিলেন।

আব্দুল আওয়াল বলেন, আরাফাতের বিয়েবাড়িতে জোরে সাউন্ডবক্সে গান বাজানো হচ্ছিল। বাড়িতে একটি অটিস্টিক শিশু থাকায় তাদের এত জোরে বক্স না বাজাতে অনুরোধ করতে তিনি বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার কারণে বিয়েবাড়ির লোকজনই তাকে মারধোর করে। এ বিষয়ে থানায় তিনি একটি লিখিত অভিযোগও করেন; কিন্তু পরে উল্টো তার বিরুদ্ধে বাসরঘর ভাঙচুর ও মারধোরের অভিযোগ তুলে শালিশ বৈঠক বসানো হয়। সেখানে ৫টি জুতার বাড়ি, ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা ও সবার সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়ার শাস্তি দেওয়া হয়।

এছাড়াও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অন্যায় না করেও শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গ্রামপ্রধান আব্দুল হক বলেন, এটা আমার একার বিষয় নয়, গ্রামের সবাই মিলেই এ রায় দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম ভুক্তভোগী আব্দুল আওয়াল থানায় অভিযোগ করার কথা স্বীকার করে যুগান্তরকে বলেছেন, লোকমুখে তিনি শুনেছেন আজ বিচারের নামে উলটো আব্দুল আওয়ালকেই জুতাপেটা করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তিনি রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম