-Cat-Show-67bb5068e94f8.jpg)
দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির, নানা রঙের বিড়ালের সমারোহে ক্যাট শো অনুষ্ঠিত হয়েছে ময়মনসিংহে। চোখে রকমারি চশমা, শরীরে বর্ণিল পোশাক, কারও কপালে টিপ, মুখে মেকআপ।
সেইসঙ্গে লাল গালিচায় নানা ভঙ্গিমায় দেশি-বিদেশি প্রজাতির ১৩০ বিড়াল নিয়ে বিড়ালপ্রেমীদের ব্যতিক্রমী প্রদর্শন যেন নজর কাড়ে উপস্থিত সবার। এ যেন এক মিলনমেলা।
ময়মনসিংহে বিড়ালপ্রেমীদের এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতেই প্রফেসরস পেট কেয়ার নামে একটি সংগঠন গত শনিবার নগরীর জয়নুল আবেদীন পার্কের বৈশাখী মঞ্চ আয়োজন করে এই ক্যাট শো ২০২৫; যা নগরের বিড়ালপ্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
অনুষ্ঠান শুরুর আগেই নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিড়াল নিয়ে হাজির হন বিড়ালপ্রেমীরা। সাজানো বিড়ালগুলো নিয়ে সন্তানের মতো লালন করে তাদের সঙ্গে আচরণ করেন মালিকেরা। দর্শকের মতোই বসে রকমারি বিড়ালগুলো। ২০২৩ সালে প্রথমবার এই সংগঠন ক্যাট শো করেছিল এই স্থানে। দ্বিতীয় বারেরমতো এবার আয়োজনটি করা হয়েছে।
এতে কোকো, মিমি, মুলু, প্রিটি, ব্রাউনি, সিম্বি, জ্যাকসো, জোজো, পরী, মারলী, সোননমনি, মিঠি, ইমু, লিও, জলিসহ নানা নামের বিড়াল নিয়ে উৎসব আমেজে ক্যাট শোতে উপস্থিত হন বিড়ালপ্রেমীরা। যেমন খুশি তেমন সাজ, প্রদর্শনী ও র্যাম্প শোতে অংশ নেয় ১৩০টি বিড়াল। সেরাদের জন্য ছিল পুরস্কারও।
পার্সিয়ান জাতের দুটি বিড়াল মা-ছেলে হাতে-কোলে নিয়ে ক্যাট শোতে উপস্থিত হন নগরীর নতুনবাজার এলাকার বাসিন্দা শাহানাজ ও ছেলে আফিদ। বিড়ালের শরীরে বর্ণিল পোশাক, চোখে চশমা। একটির নাম মুলু ও অপরটি প্রিটি।
শিক্ষকা মাহমুদা হোসেন মলি ও মেয়ে মাধুর্য দুটি সখের বিড়াল নিয়ে মঞ্চে উঠেন। এদের একটির নাম ব্রাউনি, অপরটি সিম্বি। দুটিই পার্সিয়ান জাতের বিড়াল। মানসিক অশান্তি ও একাকীত্ব কাটে তার বিড়ালদের সঙ্গে। সন্তানের ভালোবাসার মতো করে বিড়ালদের প্রতি ভালোবাসা তাদের। পছন্দসই খাবার পরিবেশন, খেলা করা, রকমারি পোশাক পরিধান ও রঙিন চশমায় দেখতে তাদের খুব ভালো লাগে। তিনি বিড়ালের প্রতি আবেগ-ভালোবাসো বাড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান।
ক্যাট শোতে আসা অন্যান্য বিড়ালপ্রেমীরা জানান, এরকম ক্যাট শো যেন বেশি বেশি আয়োজন করা হয়। এতে দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পালনে উদ্বুদ্ধ হবে প্রেমীরা। জয়নুল আবেদিন উদ্যানে ঘুরতে এসে ক্যাট শোর ব্যানার দেখে ভিড় জমান অনেকে এবং বিড়াল প্রদর্শনী তাদের নজর কাড়ে।
ক্যাট শোর আয়োজক প্রতিষ্ঠান প্রফেসরস পেট কেয়ারের পরিচালক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. মাহমুদুল আলম জানান, ময়মনসিংহে যারা বিড়াল লালন-পালন করে তাদের এক ছাতার নিচে আনার জন্য এ আয়োজন বলে জানান তিনি।
উৎসবমুখর ক্যাট শোর মাধ্যমে সারা দেশের মানুষ সচেতন হবে এবং বিড়াল পালনে আগ্রহী হবে। তিনি জানান, ক্যাাটদের প্রি-ভ্যাকসিন ফ্রিতে দেওয়া হবে।
বাকৃবি ভেটেরিনারি সাইন্স বিভাগের প্রফেসর রফিকুল আলম জানান, বিড়াল লালন-পালন একটি শৌখিনতা। ধনী-গরিব বিভিন্ন পরিবারের জন্য এই প্রাণী পোষা একটি আনন্দের বিষয়।
তিনি জানান, অনেক পরিবারে সন্তানের মতো বিড়ালের অবস্থান। আদর-যত্ন, গোসল, খাবার ও পোশাকও সন্তানের আদলে দিয়ে থাকে বিড়ালপ্রেমীরা। যেন মাতৃস্নেহেই বেড়ে উঠা বিড়ালদের জীবন।