হাট যেন ময়লার ভাগাড়, নাক চেপে ধরেও দুর্গন্ধ থেকে রেহাই নেই

পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৪৩ পিএম

উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় বাজার রাজশাহীর পুঠিয়া-বানেশ্বর হাট। বড় হাটটিতে প্রতিদিনই ভিড় করে পাইকারসহ স্থানীয়রা। তবে এ হাটে ময়লা ফেলানোর কোনো জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে হাটেই ময়লা ফেলছে ব্যবসায়ীরা। এতে করে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে মারাত্মকভাবে। নাকে ও মুখে কাপড় পেচিয়েও দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে জমছে ময়লার স্তূপ। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। আর প্রশাসন বলছে, প্রভাবশালীদের বাধায় করা যাচ্ছে না ড্রেনের কাজ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১১ দশমিক ৮৫ একর জমির ওপর অবস্থিত পুঠিয়া-বানেশ্বর
হাট। সপ্তাহে দুদিন শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে। বাংলা ১৪৩১ সনে হাটটি ইজারা হয়েছে চার
কোটি ৫১ লাখ ৫১ হাজার টাকায়।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, হাট-বাজার হতে যে আয় হবে তার শতকরা ১৫ ভাগ টাকা
প্রতিবছর হাটের উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে। কিন্তু এ হাটে ১৫ শতাংশ টাকা ব্যয় করা হয়নি
বলে জানা গেছে।
পুঠিয়া-বানেশ্বর হাটের ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘হাটের উন্নয়নের
কথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার বলা হয়েছে। হাটের চলতি বছরের রাজস্বের টাকা অলস
অবস্থায় উপজেলায় পড়ে রয়েছে।’
হাটের মাংস বিক্রেতারা বলছেন, জবাইকৃত পশুর বর্জ্য-আবর্জনা নিদিষ্ট স্থানে
ফেলার জায়গা নেই। যততত্র ময়লা ফেলতে বাধ্য হচ্ছে না তারা। এতে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এ
গন্ধের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। দুর্গন্ধের জেরে অনেকে শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে বলে
জানিয়েছে তারা।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসীদের অভিযোগ, শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষের নজরদারি ও অহেলার
কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
বানেশ্বর হাটের ব্যবসায়ী জুম্মদ আলি বলেন, ‘অবহেলার কারণে যেখানে সেখানে
পশু জবাই হয়। কশাইরা বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে গর্ত করে মাটিচাপা দেয় না। এ কারণে প্রতিনিয়ত
পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।’ ব্যবসায়ী ইয়াদুল, আব্দুর রাজ্জাক, রুস্তম আলী, তাপস পালসহ অনেক
দোকানদার অভিযোগ করে বলেন, হাটের দিন ছাড়াও অন্যান্য দিনে দুর্গন্ধের মাঝে থাকতে হয়।
অনেক সময় দুর্গন্ধের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়তে হচ্ছে তাদের।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম নূর হোসেন নির্ঝর
বলেন, ‘বানেশ্বর হাটের পশুর ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করার জন্য একটি ড্রেন নির্মাণের
প্রয়োজন রয়েছে। সেই লক্ষে ব্যবসায়ী জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা
হয়েছে। কিন্তু কিছু ব্যক্তির বাধার কারণে ড্রেন নির্মাণ করা যাচ্ছে না।’