কলমাকান্দায় দুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২১ এএম

মহান ভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পার হলেও নেত্রকোনার কমলকান্দার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠানে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অস্থায়ী শহীদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। কিছু প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না বানিয়ে শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিল করে দিবসটি পালন করা হয়। আবার যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে, সেগুলো সারা বছর পড়ে থাকে অযত্ন-অবহেলায়।
উপজেলার শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৭২ সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫৫টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ের ২৫ বিদ্যালয়ের মধ্যে
১২টিতে শহীদ মিনার আছে। এবতেদায়ী ৩৩ ও দাখিল ১১টি মাদ্রাসার মধ্যে কোনটিতেই শহীদ মিনার
নেই। কারিগরি কলেজ দুটিসহ ছয়টি কলেজের মধ্যে শুধুমাত্র কলমাকান্দা সরকারি কলেজে শহীদ
মিনার রয়েছে। এছাড়া ২৩টি কিন্ডারগার্টেনসহ ব্যক্তিমালিকানাধীন কোনো বেসরকারি বিদ্যালয়েই
শহীদ মিনার নেই।
উপজেলার বাসাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার। এ বিষয়ে
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শেলী রানী সাহা বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী
রয়েছে। অর্থের অভাবে প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক
মাতৃভাষা দিবসে একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করা হয়। সেখানে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের
প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনসহ বিভিন্ন ধরণের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।’
কলমাকান্দা উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সারোয়ার জাহান বলেন,
‘সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের নির্দেশনা
দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিসহ
এলাকার বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘মাধ্যমিক পর্যায়ে
কিছু বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকলেও শহীদ দিবসের কর্মসূচি পালিত হয়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, ‘নতুন
প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিষয়ে সচেতন করতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ
মিনার নির্মাণ জরুরি। কলমাকান্দায় এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই এ বিষয়টি
আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পর্যায়ক্রমে
সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।’