নেত্রকোনায় সোয়াই নদীর ৪০০ মিটার অংশ খননের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছেন। 

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কের শ্যামগঞ্জ হাফেজ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সড়কে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তির পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। 

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজওয়ানা কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা শান্ত হচ্ছে না। 

বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে আন্দোলন চলাকালীন বক্তব্য দেন- ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা মহানগর শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অর্ক দত্ত, শিক্ষার্থী ফাহিম, সৈয়দ এস এম রেজু, ইয়াসিন আরাফাত, সাদী আরিফিন, আরিফ, শুভ প্রমুখ।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, জেলার শ্যামগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত সোয়াই নদীর দৈর্ঘ্য ৪৬ কিলোমিটার। ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত দিক থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন সোয়াই নদীটি নেত্রকোনার পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মগরা নদীতে মিশেছে। কালের বিবর্তনে নদীটি ধীরে ধীরে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যায়। 

এলাকাবাসীর দাবির মুখে এবং নদীর পরিবেশ পুনরুদ্ধারে পানি উন্নয়ন বোর্ড গত দুই বছর ধরে নদী পুনঃখনন করে। দুটি প্যাকেজে ২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজ পায় মেসার্স ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং আমিন অ্যান্ড কোম্পানি নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

খনন কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্সের অধীনে শ্যামগঞ্জ বাজারসংলগ্ন মইলাকান্দা এলাকা থেকে শ্যামগঞ্জ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ এলাকায় ৪০০ মিটার কাজ বাকি রয়েছে। ওই অংশে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কসহ দুই পাশে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়িসহ সংস্থাপনা রয়েছে। 

নদী খননের যে ডিজাইন করা হয়েছে, তাতে ওই জায়গার বেশ কিছু অংশ এক ব্যক্তির মালিকানাধীন। সিএস, বিআরএসসহ সবকিছুর বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজটি বাস্তবায়নে বাধার মুখে খনন কাজ থেকে বিরত থাকে। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক সারোয়ার জাহান বলেন, ৪০০ মিটার অংশ খনন নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ রয়েছে। এক পক্ষের বাধার মুখে নদী খনন করা যায়নি। এছাড়া কিছুটা অংশ এক ব্যক্তির নামে সব কাগজপত্র রয়েছে। এরপরও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই ব্যক্তি ২০ ফুট করে জায়গা দিতে চেয়েছিলেন; কিন্তু নানা প্রেক্ষাপটে তিনি এখন আর রাজি হচ্ছেন না। তাই এমন বিপত্তি ঘটছে। আশা করা যাচ্ছে যৌক্তিক একটি সমাধান হবে। 

পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজওয়ানা কবির বলেন, খনন বাকি যে ৪০০ মিটার অংশ নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে এ জায়গাটি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার অংশে। তবুও আমি পরিস্থিতি শান্ত এবং জনদুর্ভোগ দূর করতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে এক সপ্তাহের মধ্যে কাজটি শুরুর ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের বললে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।