আ.লীগের মিছিল থেকে হামলা, বিএনপি নেতা-সাংবাদিকসহ ১৬৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

বগুড়ার ধুনটে হরতালের সমর্থনে আওয়ামী লীগের মশাল মিছিল থেকে ককটেল হামলার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি নেতা ও দিনকালের সাংবাদিকসহ ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে ১৬৬ বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ধুনট পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চরপাড়া গ্রামের রিপন শেখ বুধবার রাতে ধুনট থানায় এ মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওসি সাইদুল আলম এ তথ্য দিয়েছেন।
মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন- ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল সনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র এজিএম বাদশা, এলাঙ্গী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ তারেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সোবহান, গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত আলী লিটন, গোসাইবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, দৈনিক দিনকালের ধুনট উপজেলা সংবাদদাতা ইমরান হোসেন ইমন, গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন বিপুল প্রমুখ।
এজাহার ও অন্যান্য সূত্র জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতালের সমর্থনে ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার দিকে আসামিরা ধুনট উপজেলা পরিষদ এলাকায় মশাল মিছিল বের করেন। এ মিছিল থেকে পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাদী যুবদল নেতা রিপন শেখকে আক্রমণ করা হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটান।
মামলায় ৯ নম্বর আসামি করা হয়েছে দৈনিক দিনকালের ধুনট উপজেলা সংবাদদাতা ও ধুনট মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইমরান হোসেন ইমন এবং ২৬নং আসামি করা হয়েছে গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন বিপুলকে।
এছাড়া ওই মামলার আসামি গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত আলী লিটনকে সোমবার বিকালে ঘটনার আগেই সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তিনি জেলে থাকলেও তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
সাংবাদিক ইমরান হোসেন ইমন জানান, তিনি কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন না। স্বাধীন সাংবাদিকতা করেন। যখন আওয়ামী লীগের মশাল মিছিল হয় তখন তিনি ওসিকে অবহিত করেন। তার নিজস্ব অনলাইন পোর্টালে ছবিসহ নিউজ আপলোড করেন। অথচ তাকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শুনেছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুনসুর পাশা মামলায় তার নাম দিয়েছেন। তবে এ প্রসঙ্গে পাশার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আসামি ছানোয়ার হোসেন বিপুল জানান, তিনি গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনসুর পাশা বাদীকে ম্যানেজ করে আওয়ামী লীগের আসামিদের সঙ্গে তার নাম দিয়েছেন।
গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিএনপির বিরুদ্ধে যদি বিএনপিই মামলা করে তাহলে কোথায় দাঁড়াব আমরা।
গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত আলী লিটনের স্ত্রী রিক্তা বেগম জানান, তার স্বামীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। তবুও পুলিশ ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকালে ধরে নিয়ে যায়। অজ্ঞাত আসামি হিসেবে কয়েক বছর আগের মামলায় জেলহাজতে পাঠায়। জেলে থাকা অবস্থায় তাকে আরেকটি মামলায় জড়ানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম জানান, বিএনপির এক কর্মী মামলা করেছেন। তদন্ত করে মামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে হয়রানি করার সুযোগ নেই।