Logo
Logo
×

সারাদেশ

৮৬ টাকার ফল আমদানিতে শুল্ক ১২০ টাকা!

Icon

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:১৯ পিএম

৮৬ টাকার ফল আমদানিতে শুল্ক ১২০ টাকা!

তাজা ফল আমদানির ওপর রাজস্ব বোর্ডের আরোপিত উচ্চ শুল্কহার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরান ঢাকার বাদামতলী ফলপট্টির একটি মার্কেটের নিচতলায় সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুস ও সদস্য নাজিমউদ্দীন।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, উচ্চ শুল্ক হারের কারণে গত কয়েক বছর যাবত তাজা ফল আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। তাজা ফল আমদানি করলে ৬ ধরনের শুল্ক দিতে হয়। শুল্ক হার এত বেশি যে ৮৬ টাকায় কোনো ফল কিনলে সবমিলিয়ে সেটার শুল্ক কর হয় ১২০ টাকা। কিছুটা লাভ আমদানিকারক করে। এরপর সেটা খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করতে গেলে দাম আরও বেড়ে যায়।

জানা যায়, তাজা ফলের উচ্চ শুল্ক হারের বিষয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সভাকক্ষে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের (সচিব) সভাপতিত্বে অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এফবিসিসিআই ও বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বর্তমান শুল্ককর কাঠামো ও ২০২১-২০২২ ও ২০২৩-২০২৩ অর্থবছরের তাজা ফলের আমদানি চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তাজা ফল আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। আপেল আমদানির পরিমাণ কমেছে প্রায় ৫১.৭৬ %। একইভাবে মাল্টা ৭০.৫২ % ও আঙুর ২৮.৯৭% আমদানি হ্রাস পেয়েছে।

২০২৫ সালের জানুয়ারির সঙ্গে পূর্ববর্তী বছরের জানুয়ারি মাসের আমদানি চিত্র তুলনা করলে দেখা যায়, সম্প্রতি তাজা ফলের ওপর আরোপিত সম্পূরক শুল্ক ২০% থেকে ৩০% করা হয়েছে। সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে তাজা ফলের আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। যেমন মেন্ডারিন ৫১.৪৯%, আঙুর ২০.৮৬%, আপেল ৩.৪৯%, নাশপাতি ৪৫.৬৪%, আনার ড্রাগন ফল ইত্যাদি ৩১.৯৮% আমদানি  হ্রাস পেয়েছে। এতে অনুমিত হয় যে, উচ্চ শুল্ককর আরোপের ফলে আমদানি হ্রাস পেয়েছে।

এছাড়া উচ্চ শুল্ক হারের কারণে অবৈধপথে আমদানিকে উৎসাহিত করতে পারে। উচ্চ শুল্ককরের ফলে তাজা ফলের আমদানি হ্রাসের ধারা অব্যাহত থাকলে শুধুমাত্র ভোক্তা সাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে না, বরং ভবিষ্যতে রাজস্ব আরোহনও হ্রাস পাবে।

সভার গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমদানিকৃত তাজা ফলের উচ্চ শুল্কহার সমন্বয় করে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের উপপ্রধান মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়েছে। এতে তাজা ফল আমদানিতে আরোপিত স্থানীয় পর্যায়ের অগ্রিম ভ্যাট ৫% (যদিও পরে তা ফেরত দেওয়া হয় কিন্তু হয়রানিমূলক প্রক্রিয়া) আরোপ করা সমীচীন নয় বলা হয়। এছাড়াও AIT ১০% থেকে ২% করা, সম্পূরক শুল্ককর ৩০% থেকে ২০% এ আনা বা যৌক্তিক করা, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ২০% কমিয়ে যৌক্তিক করা যেতে পারে মর্মে মতামত দেয় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সিদ্ধান্ত এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি। যার প্রভাব পড়বে আসন্ন রোজার মাসে। এ অবস্থায় আমরা তাজা ফলের ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্কহার অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম