প্রেমের ছলনায় তরুণীকে ধর্ষণ, ভিডিও পাঠিয়ে বন্ধুকে ব্ল্যাকমেইলের সুযোগ

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৫২ পিএম

৮ মাস আগে ফেসবুকে ফাহাদ খান ফাহিমের (১৯) সঙ্গে পরিচয় হয় এক তরুণীর। পরে সম্পর্ক গড়িয়েছে প্রেমে। এ সম্পর্কের ৫ মাসের মাথায় ওই তরুণীর সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করে ফাহিম। ৮ মাসের মাথায় বিয়ের আলাপ করার কথা বলে ডেকে নিয়ে আবারও জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে বন্ধু নাঈম মাহাদী সাফিকে (১৮) প্রেমিকার নগ্ন ছবি ও ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফাহিমের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে ফাহিম ও সাফিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার পৌর শহরের মালাউড়ী কাজী পাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় তাদের। এ ঘটনায় বুধবার রাত ১২ টার পর তরুণীর মা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সংশ্লিষ্ট ও পর্ণোগ্রাফি ধারায় একটি মামলা করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার পঁচিশা গ্রামের ফাহিম এবং একই জেলার গোপালপুর উপজেলার চরমাহাইল হেমনগর গ্রামের (মধুপুর মালাউড়ী কাজীপাড়ার ভাড়াটিয়া) সাফি। ভুক্তভোগী ওই তরুণী সপরিবারে ওই এলাকায় ভাড়া থাকতেন।
জানা যায়, ওই তরুণীর সঙ্গে ফেইসবুকের মাধ্যমে ৮ মাস আগে ফাহিমের পরিচয় হয় এবং প্রেম পর্যন্ত গড়ায় এ সম্পর্ক। তারা বিভিন্ন স্থানে ডেটিং করে। বিয়ের নিশ্চয়তা দিয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে, শারীরিক সম্পর্ক করে। বন্ধু সাফির কাছে ওইসব ছবি শেয়ার করে। এসব ছবি নিয়ে বন্ধু সাফি তরুণীকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। ছবি মুছে দেওয়ার কথা বলে একপর্যায়ে গতবছরের ১২ ডিসেম্বর বন্ধু সাফির পরিবারের ভাড়া বাসায় তরুণীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করে ফাহিম। বিয়ের আলাপ করতে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই তরুণীকে বন্ধু সাফির বাসায় আবারও আমন্ত্রণ জানায় ফাহিম। আলাপের একপর্যায়ে ফাহিম ফের জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং গোপনে আপত্তিকর ছবি তুলে বন্ধু সাফি। পরে সেই ছবি দেখিয়ে সাফি সুযোগ নিতে চাইলে ফাহিম বাধা না দিয়ে এতে সম্মতি জানায়।
মামলার বাদীর দাবি, বাসায় ফিরে বিষয়টি তার মাকে জানিয়েছে তরুণী।
বিশেষ একটি সূত্র জানিয়েছে, ভুক্তভোগী নিজে থানায় গিয়ে পুলিশকে মৌখিক অভিযোগ করেছে। পরে মধুপুর থানা পুলিশ তার সহযোগিতায় কৌশলে ধর্ষণকারী দলের দুই বন্ধু ফাহিম ও সাফিকে গ্রেফতার করে।
মধুপুর থানার ওসি এমরানুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ও পর্ণোগ্রাফি ধারায় একটি মামলা করেছেন। ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হবে।
মধুপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনা জানার পর অল্প সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ব্ল্যাকমেইল করে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে টাকাও দাবি করতো।
তিনি জানান, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে শুধু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা নয়, পর্ণোগ্রাফির ধারায়ও মামলা হয়েছে।