‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ আন্দোলন
উত্তরের ৫ জেলায় উজ্জীবিত বিএনপি

মাহবুব রহমান, রংপুর
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
‘তিস্তা রক্ষা আন্দোলন' ঘিরে রংপুর বিভাগের উত্তরের পাঁচ জেলায় বিএনপির রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এ আন্দোলন সামনে রেখে দলীয় নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। মূলত এ আন্দোলনের আড়ালে বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগাম প্রচারণার মাঠে নেমেছে।
আন্দোলনের
শেষদিনে মঙ্গলবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের পক্ষে ভোট চেয়েছেন।
এতে তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। এটা দলের কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীসহ সাধারণ
মানুষের মাঝে সাড়া ফেলেছে। ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির
ন্যায্য হিস্যার দাবিতে উত্তরের পাঁচ জেলায় ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচিতে
দলের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বের সিংহভাগ নেতা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় এক মাস ধরে চলা
এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী
অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
অধ্যক্ষ
আসাদুল হাবিব দুলু জানান, এ আন্দোলন শুধু তিস্তাপারের মানুষের বাঁচা-মরার আন্দোলন
নয়, তিস্তা নদী বাঁচিয়ে রাখা ও জীববৈচিত্র রক্ষার লড়াই। এটি জনগণের দাবি, তাই জনগণের
দাবি পূরণের লড়াইয়ে আমরা শামিল হয়েছি। আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সামাজিক সংগঠন ও
নানা পেশার মানুষকে যুক্ত করেছি। আর এ দাবি আদায় করতে পারে আগামী জাতীয় নির্বাচনের
মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকারই। তবুও আমরা দাবি জানাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যতদিন
আছে সেই মেয়াদকালে যেন ভারতের সঙ্গে প্রয়োজনবোধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক
আলোচনার মধ্য দিয়ে এ দাবি সমাধান করুক।
এ
আন্দোলন ঘিরে দলের কোনো সফলতা দখছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক উপমন্ত্রী
আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, আমরা যেহেতু রাজনৈতিক দল করি তাই আমাদের সব আন্দোলন-লড়াই সংগ্রামের
মধ্য দিয়ে দলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হবে, সংগঠিত হবে এটাই দলের জন্য স্বাভাবিক।
১৮
ফেব্রুয়ারি শুরু করে টানা ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচির শেষদিনে মঙ্গলবার তিস্তার ১১টি স্থানে
জনতার সমাবেশে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন তারেক রহমান। তিস্তার পানির ন্যায্য
হিস্যা আদায় ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেশী
দেশ যদি আমাদের তিস্তার ন্যায্যতা না দেয় তাহলে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকা যাবে না। তাই
আগামী জাতীয় নির্বাচনে আপনাদের পছন্দের দলে ভোট দিতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা
করতে হবে। তারাই সেই দাবি আদায় করে নেবে। সেজন্য নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। দলকে
নির্বাচিত করে সরকার গঠন করতে হবে।
বিএনপি
ক্ষমতায় এলে তিস্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হবে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন,
পাশাপাশি দেশের অন্য সব নদী পুনরায় সংস্কার এবং খনন করতে হবে। শহিদ জিয়ার সেই খাল খনন
কর্মসূচি আমাদের পুনরায় হাতে নিতে হবে।
রংপুর
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু বলেন, আমরা তিস্তা রক্ষার আন্দোলন শুরু
করেছি। এ আন্দোলন ছিল জনগণের আন্দোলন। এ আন্দোলন ঘিরে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে যুক্ত করেছি। তারাই ছিল এ আন্দোলনের চালিকাশক্তি। দলের
নেতাকর্র্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করেছে, শতাধিক সভা-সমাবেশ করেছে। এতে তৃণমূল পর্যায়ে
মানুষের সঙ্গে সেতুবন্ধ তৈরি হয়েছে। দলের প্রতি মানুষের আস্থা-বিশ্বাস বেড়েছে। এ আন্দোলন
ঘিরে দলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছে। দলের সাংগঠনিক ভিত্তিও আরও দৃঢ় হয়েছে। এ কারণে
আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের প্রতি মানুষের সমর্থন বাড়বে।