কিশোরীকে নিয়ে উধাও ছেলে, গাছের ডালে বাবার ঝুলন্ত লাশ

চৌদ্দগ্রাম দ. (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২৮ পিএম

কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে আব্দুল করিম নামে এক যুবক নবম শ্রেণির এক কিশোরীকে নিয়ে উধাও হওয়ার ৪ দিন পর তার বাবা তৈয়ব আলীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে বাড়ির পাশের গাছে।
বুধবার উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা রাঙামাটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
মৃতের পরিবারের দাবি, কিশোরীর পরিবার পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে গেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্কের জেরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মৃতের ছেলে আব্দুল করিম মাদ্রাসা পড়ুয়া এক কিশোরীকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এ ঘটনায় কিশোরীর মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) অনন্ত দাস ও কিশোরীর আত্মীয় আবু বক্কর ও আব্দুল হান্নান নামে দুই ব্যক্তি মৃতের বাড়িতে গিয়ে কিশোরীর সন্ধানের জন্য পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি ও হুমকি ধমকি দেন। মঙ্গলবার বিকালে আবারো উপ-পরিদর্শক আবু বক্কর ও আব্দুল হান্নান নিহত তৈয়ব আলীকে চাপ প্রয়োগ করেন এবং একপর্যায় তারা তৈয়ব আলীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
তৈয়ব আলী পার্শ্ববর্তী একটি গার্মেন্টসের শ্রমিক। এ ঘটনার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তৈয়ব আলী নিখোঁজ থাকেন। পুলিশের ভয়ে বাড়িছাড়া হয়ে যান তার স্ত্রী রহিমা বেগম এবং অপর ছেলে মো. রনি। বুধবার ভোরে স্ত্রী রহিমা বেগম বাড়িতে আসেন। এসে তিনি দেখেন বাড়ির পাশের একটি আম গাছের ডালে গামছা দিয়ে তৈয়ব আলীর লাশ ঝুলে আছে। এ সময় তার আর্ত-চিৎকারে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
তৈয়ব আলীর স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, শনিবার ঘটনার পর থেকে পুলিশের সঙ্গে কিশোরীর আত্মীয়স্বজনরাও আমাদের বাড়িতে আসত এবং তারা আমাদের নানান ধরনের হুমকি ধমকি দিত। মঙ্গলবার বিকালে পুনরায় আমাদের বাড়িতে এসে আমার স্বামীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। এরপর থেকে আমরা পুলিশের ভয়ে বাড়িছাড়া। সকালে আমি বাড়িতে এসে দেখি আমার স্বামীর লাশ আমগাছের সঙ্গে ঝুলে আছে। আমি এর বিচার চাই।
এএসআই অনন্ত দাস বলেন, আমি কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য তৈয়ব আলীদের বাড়িতে একাধিকবার গিয়েছি সত্য; কিন্তু আমি তাকে কোনো প্রকার শারীরিক লাঞ্ছিত কিংবা চাপ প্রয়োগ করিনি।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন বলেন, বুধবার ভোরে তৈয়ব আলীর ঝুলন্ত লাশ দেখে আমাদের খবর দিলে আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করি। মৃতের পরিবার যদি মামলা করতে চায়, আমরা তাদের আইনগতভাবে সহায়তা করব।