রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন
কৃষকের লিজ নেওয়া জমি দখল করে বিক্রির অভিযোগ

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:০৩ এএম

রাজশাহীতে এক কৃষকের লিজ নেওয়া জমি দখল করে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী কৃষক জুলহাস উদ্দিন সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন। বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী শাখা কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। জুলহাসের বাড়ি নগরীর শাহমখদুম থানার বড়বনগ্রাম কুচপাড়া মহল্লায়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বড়বনগ্রাম কুচপাড়ার ৮২ নম্বর মৌজার ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ১০৫ শতাংশ জমি ১৯৭৮ সালে তার বাবা মৃত মুসলেম উদ্দিন সরকারের কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেন। তার বাবার মৃত্যুর পর থেকে জুলহাস ও তার দুই ভাই এবং দুই বোন জমিটি ভোগদখল করে আসছেন। এই জমিতে চাষাবাদ করেই তাদের পাঁচটি সংসার চলে।
এখন এলাকার বিএনপিকর্মী আমজাদ আলী, তার ভাই আজাদ আলী, এলাকার বাসিন্দা সাদেরুল, শাকিব, সেলিম, শফি ও ইনছার আলী ওই জমি দখল করে নিয়েছেন। তারা এ জমি প্লট আকারে পানির দরে বিক্রি করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জুলহাস বলেন, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর ২০ অক্টোবর আমজাদ ও তার ভাই আজাদ আমাকে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলেন। এরপর জিয়া পার্কের পাশে বিএনপির কার্যালয়ে আমাকে নিয়ে গিয়ে জমি থেকে গাছ, বাঁশ ও ফসল কেটে ফেলতে বলেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে আমার ও আমার পরিবারের ক্ষতি হবে এমন হুমকি দেন। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জমিটি থেকে আমাদের দখলমুক্ত করার আলটিমেটাম দেন। তারা আমাকে বলেন, বিএনপি এখন ক্ষমতায় এসেছে। তাই জমিটি ছেড়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ না নিলে তারা সন্ত্রাসী বাহিনীসহ আমার জমিতে গিয়ে সব গাছ কেটে দেয়। তারা জমিতে থাকা আনুমানিক ৯ থেকে ১০ লাখ টাকার বাঁশ, কলাসহ বিভিন্ন ফসলের গাছ কেটে ফেলে। ২২ অক্টোবর এ ঘটনা শোনার পরদিন আমি থানায় একটি অভিযোগ করি। তবে থানার তৎকালীন ওসি অভিযোগের বিষয়ে অন্য কোথাও সাহায্য নিতে বলেন। এরপর আমি আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা করি। আদালত জমিটির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তবে তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেও জমিতে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। পরে লোক মারফত আমরা জানতে পারি, জমিটি প্লট আকারে বিক্রির প্রস্তুতি চলছে এবং জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে একাধিক মানুষের কাছে বিক্রিও করেছেন তারা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আজাদ আলী বলেন, ওই জমি খাস। জুলহাস জমির কাগজ দেখাতে পারবে না। খাসজমি বলে বস্তির লোকজন দখলে নিচ্ছে বাড়ি করবে বলে। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমরা ওই জমিতে কখনো যাইনি।
আজাদ আলী জানান, তিনি এবং তার ভাই কোনো দলই করেন না। তাদের দলীয় কোনো পরিচয় নেই। জুলহাসকে বিএনপি কার্যালয়ে ডাকার কথা সঠিক নয় বলে দাবি করেন আজাদ আলী।