Logo
Logo
×

সারাদেশ

আ.লীগ নেতার অনৈতিক কাজে রাজি না থাকায় বরখাস্ত সুপার ফিরে পেলেন চাকরি

Icon

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম

আ.লীগ নেতার অনৈতিক কাজে রাজি না থাকায় বরখাস্ত সুপার ফিরে পেলেন চাকরি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের এমএ মান্নান মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. গোলাম মোস্তফা আওয়ামী লীগ নেতার রোষানলে পড়ে চাকরি হারিয়ে ১০ বছর পর ইউএনওর নির্দেশে স্বপদে পুনর্বহাল হয়েছেন।

রোববার সকালে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির নেতাকর্মী এবং এলাকার লোকজন ফুলের মালা দিয়ে সুপারকে স্বপদে বসান।

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা এমএ মান্নানের অনৈতিক কাজে মাদ্রাসার সুপার মো. গোলাম মোস্তফা রাজি না থাকায় ২০১৪ সালে সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর বরখাস্ত হওয়া সুপার সুবিচারের জন্য ইউএনওর কাছে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলামের নির্দেশ মোতাবেক রোববার সকালে মাদ্রাসায় যোগদান করেন মাওলানা মো. গোলাম মোস্তফা।

এ সময় উপস্থিত উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোড়ল, কটিয়াদী পৌর যুবদলের সভাপতি প্রিন্স আজিজসহ  প্রতিষ্ঠানের সহকর্মী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, স্থানীয় নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসা সুপারকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

এমএ মান্নান মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার পদে কর্মরত থাকাকালে ২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর জালসনদে শিক্ষক নিয়োগ ও অনুমতি ছাড়া প্রতিষ্ঠানের ১৮টি গাছ বিক্রি করেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ওই আওয়ামী লীগ নেতা। এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার প্রতিবাদ করলে তৎকালীন সভাপতি আওয়ামী লীগের দোসর এমএ মান্নান সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সূত্রে জানা যায়,  এমএ মান্নান মহিলা দাখিল মাদ্রাসা সুপার মো. গোলাম মোস্তফাকে ২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত করেন তৎকালীন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

সরেজমিন তদন্ত করে দেখা যায়, ওই প্রতিষ্ঠানের পদত্যাগকারী সহকারী শিক্ষক (গণিত ও বিজ্ঞান) জাহাঙ্গীর আলমের নিবন্ধন সনদ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অডিটে জাল প্রমাণিত হয়। তার বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়; কিন্তু নিকটাত্মীয় হওয়ায় প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এমএ মান্নান এটা না করার পক্ষে অবস্থান নিলে সুপার মো. গোলাম মোস্তফার সঙ্গে তার মতবিরোধ সৃষ্টি হয়।

পরবর্তী সময়ে সভাপতি প্রতিষ্ঠানের ১৮টি গাছ বিক্রয় করেন এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে জমা দেননি। গাছ বিক্রিতেও সরকারি বিধি বিধান অনুসরণ করা হয়নি। এসব বিষয়ে রেজুলেশন করতে বললে সুপার রাজি না হওয়ায় তিনি গোপনে জাল রেজুলেশন তৈরি করেন। এজন্য সুপার মো. গোলাম মোস্তফাকে সাময়িক ও চূড়ান্ত বরখাস্ত করেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল হোসেন জানান, অন্যায়ভাবে সুপার গোলাম মোস্তফাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তদন্ত করে আমি তার সত্যতা পেয়েছি।

কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলাম জানান,  এমএ মান্নান মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। মাদ্রাসা বোর্ডের চিঠি অনুযায়ী সুপারকে খোরপোষ ভাতা দেওয়া ও কর্মস্থলে নিয়মিত হাজির হয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য বোর্ডের আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশনে একটি চিঠি পাঠানো হবে। বোর্ড পরবর্তীতে সুপারের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম