ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের পর তরুণীকে পরানো হলো শাখা-সিঁদুর, যুবকের নামে মামলা

যুগান্তর প্রতিবেদন, বরগুনা
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম

প্রতীকী ছবি
বরগুনায় এক হিন্দু যুবক নিজের নাম ও ধর্ম গোপন করে মুসলিম তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করেছেন। পরে সে তরুণীকে ধর্ষণ করে শাখা সিঁদুর পরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই তরুণী রোববার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তিনজনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করে। ওই ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লাইলাতুল ফেরদৌস মামলাটি গ্রহণ করে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামীরা হলেন-বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার কড়ইতলা হাড়িপাড়া গ্রামের উত্তম পাইকের ছেলে দিপু পাইক (২৩), তার বন্ধু গৌতম পাইক ও বিমল হাওলাদার। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু।
জানা যায়, আমতলীর এক তরুণীর সঙ্গে মুঠোফোনে পরিচয় হয় দিপু পাইকের। এ সময় দিপু পাইক নিজেকে একটি মুসলিম পরিবারের সন্তান হিসেবে পরিচয় দেয়। পরে দু'জনের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেম চলে। এক পর্যায়ে দিপু ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তরুণী পারিবারিকভাবে বিয়েতে রাজি হয়। কিন্তু দিপু গোপনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে চায়। তরুণী এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে ক্ষুব্ধ হয়।
গত ১ ফেব্রুয়ারী আনুমানিক সকাল ৯টার দিকে ওই তরুণী আমতলীর কড়াইবুনিয়া গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে কাচা রাস্তায় গেলে ওই তিন যুবক একটি অটো (মাহেন্দ্র) গাড়িতে তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে প্রথমে বরিশাল নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকার হেমায়েতপুরে নিয়ে যায়। আসামী দিপু পাইক তার বন্ধুদের সহায়তায় ১ ফেব্রুয়ারি হতে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাধিকবার তরুণীকে ধর্ষণ করে।
তরুণী বলেন, দিপু পাইক আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে বিরক্ত করত। আমি নিষেধ করলেও দিপু বারবার ম্যাসেজ দিত। আমি আস্তে আস্তে দিপুর প্রতি দুর্বল হয়ে যাই। দিপু পাইক নাম গোপন করে নিজের নাম অনিক এবং নিজেকে মুসলিম বলে প্রকাশ করে। দিপু আমাকে বিভিন্ন প্রকার মিথ্যা প্রলোভন দেখাতে থাকে। আমি পারিবারিকভাবে বিয়ের কথা বলায় দিপু রাজি হয়নি। দিপু চাচ্ছিল আমরা গোপনে বিয়ে করি। আমি দিপুর প্রস্তাবে রাজি হইনি। এতে দিপু ক্ষিপ্ত হয়ে তার বন্ধুদের নিয়ে জোরপূর্বক আমাকে অপহরণ করে ৬ দিন ধর্ষণ করে। আমি পরে জানতে পারি দিপু পাইক হিন্দু। তার নাম অনিক নয়। একজন হিন্দু ছেলে মুসলমান নাম ধারণ করে আমাকে ধর্ষণ করেছে।
তরুণী আরও বলেন, দিপু দুই বন্ধুর সহায়তায় জোরপূর্বক খুনের ভয় দেখিয়ে আমার মাথায় সিঁদুর ও হাতে শাখা পড়িয়ে দেয়। দিপু যতবার ধর্ষণ করেছে ততবার ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণ করেছে। আমি সুযোগ পেয়ে আমার চাচাতো বোনকে জানাই। পরে তারা এসে আমাকে উদ্ধার করে। দিপুর ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফ হোসেন বলেন, আমি এখন পর্যন্ত আদালতের আদেশ পাইনি। আদেশ পেলে আসামীদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করব।