ব্যবসায়ীর অপহরণ নাটকের নেপথ্যে…

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫১ পিএম

প্রতীকী ছবি
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় বালিয়াটি ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামের ১ ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী (৩০) গত ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় অপহৃত হন। অপহরণের পর সেই ব্যবসায়ীর ভাই আমিনুর ইসলাম অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।
এ নিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি দৈনিক পত্রিকায় ‘ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর ৮ লাখ টাকা চাঁদা দাবি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। অথচ এই নাটকের স্ক্রিপ্ট লিখেছেন অপহরণ হওয়া সেই ইদ্রিস আলী নিজেই।
এর আগে তার পরিবার সত্রে জানা জায়, বালিয়াটি ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামের মো. নজর আলীর ছেলে মো. ইদ্রিস আলী শনিবার সন্ধ্যায় পাওনাদারের দেড় লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি।
পরে তার স্ত্রী নিপা আক্তার জানান, অপহরণ হওয়ার পর দিন দুপুর থেকে তিনবার ফোন দিয়েছে অপহরণকারীরা। মোবাইলে ফোন দিয়ে ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। না দিলে তার স্বামীকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয় তারা।
এক পর্যায়ে চ্যালেঞ্জের মুখে ঘটনা তদন্তে মাঠে নামে সাটুরিয়া থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে টাঙ্গাইলের রাজমনি হোটেল থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ব্যবসা করতে গিয়ে নানাভাবে ঋণে জর্জরিত হয়ে যান ইদ্রিস আলী। ঋণের টাকা শোধ করতে না পেরে নিজেকে অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন তিনি। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালোর নেতৃত্বে একটি টিম টাঙ্গাইলের রাজমনি হোটেল থেকে তাকে আটক করে।
পরিদর্শক মানবেন্দ্র বালো বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বাদীর দেওয়া তথ্যে মতে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করি এটি অপহরণের মামলা নয়। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে তদন্তের মাধ্যমে বিভিন্ন লোকেশনে অভিযান পরিচালনা করে অবশেষে টাঙ্গাইল জেলা শহরের রাজমনি হোটেল থেকে ইদ্রিস আলীকে উদ্ধার করি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর জানতে পারি এলাকায় ব্যবসা করতে গিয়ে মানুষের কাছে ঋণে জর্জরিত তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাটুরিয়া থানার ওসি শাহিনুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় ব্যবসায়ী অপহরণের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপে ছিলাম। এক প্রকার চ্যালেঞ্জের মুখে আমি আমার অফিসারদের দিক নির্দেশনা দিয়ে ইদ্রিস আলীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। ঋণের চাপে এ রকম একটা ঘটনা ঘটান তিনি। এটা যে অপরাধ, তিনি বুঝতে পারেননি। মানবিক দিক বিবেচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মুচলেকা নিয়ে তার পরিবারের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।