আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের প্রতিবিপ্লবের প্রথম শহিদ গাজীপুর মেট্রোর গাছা থানার দক্ষিণ কলমেশ্বরের আবুল কাসেম বলে মন্তব্য করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ গত ১৫ বছর পুলিশকে জনগণের বিপক্ষে ব্যবহার করেছে।আমরা অঙ্গীকার করছি, যারা জনগণের কাজ করবে পুলিশ তাদেরই পাশে থাকবে। কখনো যদি ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ তা রুঁখে দেবে।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজবাড়ি মাঠে শহিদ আবুল কাসেমের জানাজার পূর্বে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কাসেমের জানাজায় বিএনপি, জামায়াত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, পুলিশ বিভাগ, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ, সাংবাদিক, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের শত শত মানুষ অংশ নেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা থেকে আবুল কাসেমের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স রাজবাড়ি মাঠে এসে পৌঁছালে তাকে একনজর দেখার জন্য মানুষের ভিড় জমে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজবাড়ি মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা পরিচালনা করেন হেফাজত ইসলামের গাজীপুর জেলা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক মুফতি নাছির উদ্দিন খান।

দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে লাশ গাজীপুর মহানগরের গাছা থানাধীন দক্ষিণ কলমেশ্বরে তার বাড়িতে নেওয়া হয় এবং সেখানে তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

জানাজা শুরুর আগে বক্তব্য রাখেন, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাশেদ, কেন্দ্রীয় সদস্য ইমতিয়াজ আহমেদ তানভীর, নয়ন দেওয়ান, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মো.  হোসেন আলী, গাজীপুর সদর মেট্রো থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান এলিস, টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির সভাপতি প্রভাষক বশির আহমেদ, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন, গাজীপুর সদর মেট্রো থানা জামায়াতের আমীর সালাহ উদ্দিন আইউবী,  গাছা থানা জামায়াতের আমীর নিয়াজ উদ্দিন, ছাত্র অধিকারের নেতা ফরিদুজ্জামান জাহিদ, ইসলামী ছাত্রশিবির জেলা কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম প্রমুখ।

পুলিশ কমিশনার বলেন, অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে অনেক সন্ত্রাসী গ্রেফতার হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি সন্ত্রাসীরা কোনো দলের হয় না। ফ্যাসিবাদ কোনো দলের হয় না। যারা রাজনীতি করে তারা ফ্যাসিবাদ হয় না। হতে পারে না। রাজনীতি আর ফ্যাসিবাদ এক জিনিস নয়। জনগণের রাজনীতি যারা করে আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমরা জনগণের কল্যাণে যারা কাজ করে তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমরা পুলিশ জনগণকে নিয়ে সব সন্ত্রাসীকে দমন করতে চাই। সব ক্রিমিনালকে আইনের আওতায় আনতে চাই। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপনারা প্রতিরোধ গড়ে তুলুন, পুলিশ আপনাদের সঙ্গে আছে, প্রশাসন আপনাদের পাশে আছে। কখনোই আর ওই হায়নার দল আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।

গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক জামাল উদ্দিন তার বক্তব্যে শহীদ আবুল কাসেমের একমাত্র ছোট বোনের লেখাপড়া ও বিয়ের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন। ছাত্র নেতারা মাজাম্মেলের বাড়িতে হামলা ও রাজবাড়ি রোডে ছাত্রকে গুলি করার ঘটনায় জড়িতরা সবাই গ্রেফতার না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।