Logo
Logo
×

সারাদেশ

ছাতকে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি, অনিয়মের অভিযোগ

Icon

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:২৫ পিএম

ছাতকে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি, অনিয়মের অভিযোগ

সুনামগঞ্জের ছাতকে ধীরগতিতে চলছে হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছে কৃষকেরা।আগামী ২৮ ফেরুয়ারির মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও তা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কাজ শুরুর দেড় মাস অতিবাহিত হলেও অধিকাংশ বাঁধের কাজ ৫০ শতাংশও হয়নি। পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) বিরুদ্ধে উঠেছে লুটপাটের অভিযোগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছাতকে হাওরে বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের জন্য ২৮টি পিআইসি রয়েছে। চলতি বছরে বাঁধের জন্য বরাদ্দ হয়েছে তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা। দেড় মাস আগে শুরু হওয়া বাঁধের কাজ চলতি মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে কাজ চলছে ধীরগতিতে। বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে বাকি কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন না হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন হাওরের সফল রক্ষা বাঁধ ঘুরে এবং কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বোরো বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে থাকে সরকার। সময় মতো টেকসই কাজ করা হলে বড় ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া ফসলের ক্ষতির কারণ নেই।

বাঁধের কাজ পেতে ও পিআইসির কমিটিতে থাকতে প্রথম দিকে অনেকেই লবিং শুরু করেন। কাজ পাওয়ার পর সেই আগ্রহ থেমে যায়। চলে ইচ্ছামতো কাজ।

উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের চানপুরের ৭ নাম্বার পিআইসিতে ৬০৫ মিটার ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ হয়েছে ছয় লাখ ৮৮ হাজার ১১৩ টাকা। বুকী নদীর পাড় দিয়ে নির্মিত এ বাঁধের কাজ হয়েছে মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। দেড় মাস অতিবাহিত হলেও এখনও বাঁধে পর্যাপ্ত মাটি দেওয়া হয়নি।  নির্দেশনা থাকলেও দেওয়া হয়নি কোনো সাইনবোর্ড।

বাঁধটি নির্মাণে ট্রাক্টর যাতায়াতের জন্য স্থানীয় একজনের ১০টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তবে তাকে দেওয়া হয়নি কোনো ক্ষতিপূরণ।

এ বাঁধ নির্মাণে যুক্ত পিআইসি কমিটির সদস্য সচিব মোশাররফ হোসেন প্রভাষক হলেও তাকে কাগজে কলমে কৃষক দেখানো হয়েছে।

উপজেলার চানপুর ২৮ নম্বার পিআইসি ডুবন্ত বাঁধ ও ডালা বন্ধকরন ৭৭৩ মিটার কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ১৫৯ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, এখানে কাজের চেয়ে বরাদ্দ বেশি। এছাড়া উপজেলার জাউয়াবাজার, দক্ষিণ খুরমা, উত্তর খুরমা, নোয়ারাইসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুপারভিশন কর্মকর্তা (এসও) এবং মাঠকর্মী ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুস দিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ করেছে একাধিক পিআইসি কমিটি।

জাউয়াবাজার, চরমমহল্লা ইউনিয়নের একাধিক কৃষক জানান, পিআইসি যেভাবে ধীরগতিতে চলছে তাতে প্রতিবছরের মতো এবারও লুটপাটের শঙ্কা রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পর এবার স্থানীয় কয়েখজন সেই লুটপাট চালাচ্ছে। লুটপাট ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফসল রক্ষা বাঁধ নিয়ে কোনো অভিযোগ যেন না আসে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের (ডাব্লিউএমজি) আওতায় আনা সম্ভব হলে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কোনো অভিযোগ আসবে না। তাই ডাব্লিউএমজির আওতায় এলাকার সব কৃষককে পৃথকভাবে সম্পৃক্ত করা হবে। পাউবোর কোনো এসওর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কোনো ধরণের অনিয়ম-দুর্নীতি বা গাফিলতি সহ্য করা হবে না। প্রমাণ পেলে যত বড় প্রভাবশালীই হোক তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম