বাড়িতে অবস্থান করেও প্রেমিকের সাড়া না পেয়ে যা করলেন কলেজছাত্রী

বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২৯ পিএম
-67ab7afd375dd.jpg)
বগুড়ার শাজাহানপুরে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে কয়েক দিন অবস্থান করেও তার সাড়া না পাওয়ায় অবশেষে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মহননের পথ বেঁছে নিয়েছেন কলেজছাত্রী রিফাত জাহান বৃষ্টি (১৯)।
সোমবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বৃকুষ্টিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ মঙ্গলবার সকালে লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
মঙ্গলবার বিকালে শাজাহানপুর থানার ওসি ওয়াদুদ আলম জানান, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ছাত্রীর স্বজনরা মামলা দিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
পুলিশ, স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, রিফাত জাহান বৃষ্টি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বৃকুষ্টিয়া পশ্চিমপাড়ার কৃষক আরিফুল ইসলাম মেয়ে। তিনি বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। একই উপজেলার চোপিনগর ইউনিয়নের ননীপাড়া গ্রামের কৃষক মহসিন আলীর ছেলে আল আমিন (৩১) গত তিন বছর আগে বৃষ্টির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আল আমিন স্থানীয় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে মালি পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করেন।
অনেক অনুরোধ করলেও আল আমিন তাকে (বৃষ্টি) বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না। তিনি বিয়ের দাবিতে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর আল আমিনদের বাড়িতে গিয়ে কয়েক দিন অবস্থান করেন। আল আমিনের পরিবার বৃষ্টিকে বুঝিয়ে বাবা-মায়ের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে বৃষ্টি বিয়ের জন্য আল আমিনকে চাপ দিয়ে আসছিলেন; কিন্তু তিনি প্রতিবারই বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে বৃষ্টি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বৃষ্টি সোমবার সন্ধ্যার দিকে নিজ শয়ন ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
শাজাহানপুর থানার এসআই মোসলেম উদ্দিন জানান, ময়নাতদন্ত শেষে কলেজছাত্রী বৃষ্টির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবার থেকে দাবি করা হচ্ছে, প্রেম সংক্রান্ত কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিছু তথ্য পাওয়া গেছে; যা যাচাই-বাছাই চলছে। কলেজছাত্রীর আত্মহত্যার ব্যাপারে বুধবার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। পরিবার থেকে মামলা দিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানাতে উপজেলার চোপিনগর ইউনিয়নের ননীপাড়া গ্রামে আল আমিনদের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। বিয়ের দাবিতে বৃষ্টি অবস্থান করায় আল আমিন ও তার বাবা মহসিন আলী গত ১০ ডিসেম্বর বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে রয়েছেন।
প্রতিবেশীরা বলেন, বৃষ্টি প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করেও তাদের মন পায়নি। বিয়ের দাবিতে সে কয়েক দিন এখানে এসে ফিরে গেছে। তারা দাবি করেন, আল আমিন প্রতারক; সে আরও কয়েকজন নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করলেও তাদের বিয়ে করেনি। আর প্রতারণার শিকার হয়েই বৃষ্টি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। তারা প্রতারক আল আমিন ও তার পরিবারের সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।