ছাত্রীকে টয়লেটে নিয়ে যাওয়ার বিষয় প্রকাশ করায় ফাহিমকে হত্যা করা হয়

বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৯ পিএম
-67ab719dd53dc.jpg)
বগুড়ায় দশম শ্রেণির স্কুলছাত্র মো. ফাহিম (১৮) হত্যারহস্য উন্মোচিত হয়েছেন। স্কুলের এক ছাত্রীকে টেনেহিঁচড়ে টয়লেটে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শিক্ষককে বলে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাকে হত্যা করে। মীমাংসার কথা বলে সোমবার রাতে তাকে শহরের কলোলি এলাকায় ডেকে এনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
এ ব্যাপারে নিহতের বাবা ফরহাদ ওরফে মানিক সদর থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
গ্রেফতার আসামি মো. রাব্বী (১৯) মঙ্গলবার বিকালে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন এ তথ্য দিয়েছেন।
পুলিশ ও এজাহার সূত্র জানায়, নিহত ফাহিম বগুড়া সদরের চকফরিদ প্রামাণিকপাড়ার ফরহাদ ওরফে মানিকের ছেলে। সে লতিফপুর এলাকায় ফয়জুল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। বগুড়া সদরের লতিফপুর কলোনির শফিকুল ইসলাম লিপ্পনের ছেলে মো. সিমান্ত (২১), চক লোকমান কলোনির রুস্তম আলীর ছেলে মো. রাব্বি (১৯), শাজাহানপুর উপজেলার লতিফপুর মধ্যপাড়ার তরিকুল ইসলাম (১৯), একই এলাকার খাজা মিয়ার ছেলে মো. জাকির (২০), বেজোড়ার শ্রাবণ (১৯), চক লোকমানের মুগ্ধ (২০) ছাড়া আরও ৩-৪ জন একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
প্রায় চার মাস আগে স্কুল চলাকালে ফাহিম স্কুলের টয়লেট থেকে বের হওয়ার সময় দেখে- এক ছাত্র স্কুলের এক ছাত্রীর হাত ধরে টয়লেটের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য টানাহেঁচড়া করছে। ফাহিম বিষয়টি স্কুলের শিক্ষককে বললে তিনি ওই ছাত্রকে শাসন করেন। এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়। তারা এ বিরোধ মীমাংসার জন্য গত সোমবার রাত ৮টার দিকে ফাহিমকে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে ডাকে। ফাহিম সেখানে পৌঁছলে পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে আসামিরা তাকে কিলঘুসি মেরে বালুর স্তূপে ফেলে দেয়।
এ সময় এজাহার নামীয় ২-৫ নম্বর আসামিসহ অজ্ঞাতরা ফাহিমের হাত-পা ধরে রাখে এবং আসামি সিমান্ত হাতে থাকা চাকু দিয়ে আঘাত করে। হামলাকারীরা পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা রক্তাক্ত ফাহিমকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) একেএম মঈন উদ্দিন ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফজলে এলাহী জানান, এ ব্যাপারে নিহতের বাবা রাতেই থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। রাতভর অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার সকালে অন্যতম আসামি রাব্বীকে গ্রেফতার করা হয়। সে পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার ও হত্যার কারণ উল্লেখ করে। বিকালে তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে হাজির করা হয়। রাব্বী সেখানে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।