৬০ ফুট উঁচু ১৩২ কেভি লাইনের তারে ঝুলে যুবকের কাণ্ড

চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৬ পিএম

কুমিল্লার চান্দিনায় পাওয়ার গ্রিডের ১৩২ কেভির বৈদ্যুতিক লাইনের তার বেয়ে ঘুড়ি আনতে যায় এক যুবক। প্রায় ৬০ ফুট উচ্চতার বৈদ্যুতিক টাওয়ারে উঠে ওই লাইনের তারে ঝুলে ঘুড়ি আনার দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেন শত শত উৎসুক জনতা।
অনেকে ওই ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়।
রোববার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে চান্দিনা পৌরসভার হারং এলাকায় ওই ঘটনা দেখেন স্থানীয়রা। ঘুড়ি আনতে যাওয়া ওই ব্যক্তিকে প্রথমে মানসিক ভারসাম্যহীন ভেবে আতঙ্কিত হন স্থানীয়রা। এখনই বুঝি বৈদ্যুতিক শকে পুড়ে মাটিতে পড়বে এমন আশঙ্কা নিয়ে রীতিমতো তাদের মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি করতে শোনা যায়।
স্থানীয়রা জড়ো হয়ে যখন এ দৃশ্য দেখছিল ঠিক তখন চান্দিনা-রামমোহন সড়কে চলাচলরত অনেক যানবাহন থামিয়ে যাত্রীরাও দেখতে থাকেন। বলতে থাকেন, এটা কিভাবে সম্ভব? এই ছেলে এত উঁচুতে তার বেয়ে কিভাবে উঠল? যেখানে বিদ্যুতের সাধারণ লাইন স্পর্শ করলে মানুষ মুহূর্তেই মারা যায়, আর এমন উচ্চ ভোল্টের তারে কিভাবে উঠল? জীবনের চেয়ে কি ঘুড়ির মূল্য বেশি? এমন নানা কথা বলছেন আর মহান সৃষ্টিকর্তাকে প্রাণ ভরে ডাকছেন যেন ছেলেটি সুস্থ অবস্থায় মাটিতে নেমে আসতে পারে।
প্রায় ৪০ মিনিট পর সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় আবারও তার বেয়ে মাটিতে নেমে আসার পর উৎসুক জনতা তাকে ঘিরে ফেলে।
জানা যায়, ওই ছেলে বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণের কাজ করেন। গত এক বছর যাবত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন ছয়ঘড়িয়া এলাকায় পাওয়ার গ্রিডের নির্মাণ কাজ হয়। ওই কাজ এখন শেষপর্যায়ে। ১৩২ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন ওই পাওয়ার গ্রিড খুব শিগগিরই চালু হওয়ার কথা রয়েছে। বৈদ্যুতিক ওই লাইনের হারং এলাকায় একটি ঘুড়ি আটকে থাকায় প্রায় ২৫ বছর বয়সি ওই শ্রমিক তার থেকে ঘুড়ি সরাতে সেখানে উঠে। কাঁধে সেফটি বেল্ট থাকা ওই বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ শ্রমিক তার নাম ও পরিচয় দেয়নি। শুধু বলছেন পল্লী বিদ্যুতের সামনে আমরা ভাড়া থেকে কাজ করি।
স্থানীয় মোটরসাইকেল মেকানিক আসিফ জানান, আমরা দোকানে কাজ করা অবস্থায় হঠাৎ মানুষের চিৎকার শুনতে পেয়ে বের হয়ে দেখি- একটি লোক গ্রিডের তারে ঝুলে আছে। আমরাও প্রথম ভেবেছিলাম হয়তো পাগল হবে। এত উঁচুতে ছিল যে নিচ থেকে মানুষটিকে ভালোভাবে কিছুই বুঝা যাচ্ছিল না। এমন দৃশ্য দেখে স্থানীয় নারী-পুরুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ওই লোক নেমে আসার পর জানতে পারি তিনি বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণের শ্রমিক।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দীপক দেবনাথ জানান, ওই লাইনটি ছয়ঘড়িয়া পাওয়ার গ্রিডের। ২-১ দিনের মধ্যেই চালু হওয়ার কথা। লাইনে বিদ্যুৎ না থাকায় রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ওই শ্রমিক সেখানে উঠেন, না হয় সেখানে কোনো মানুষ উঠারই কথা নয়।