চেহারা নয়, ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় যাচাই চান পর্দানশীল নারীরা

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪০ পিএম

চেহারা নয়, ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় যাচাইয়ের দাবিতে শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন করেছেন পর্দানশীল নারীরা। সোমবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সামনে ‘মৌলভীবাজার পর্দানশীল নারী অধিকার পরিষদ’র আয়োজনে এ মানববন্ধন করেন শতাধিক নারী।
এ সময় পরিষদের আহবায়ক মরিয়ম আহমেদ বলেন, কেবল পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে পর্দানশীল নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। গত ১৬ বছর আওয়ামী শাসনামলে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কতিপয় স্বৈরাচারী কর্মকর্তারা অসংখ্য পর্দানশীন নারীর মুখচ্ছবি না তোলার অজুহাতে নাগরিকত্ব সনদ আটকে রাখা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। পরিচয় যাচাইয়ে জোর করে বেগানা পুরুষের সামনে তাদের চেহারা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমরা এসব হেনস্তার অবসান চাই।
মানুষের চেহারা পরিবর্তনশীল উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিচয় যাচাইয়ে এটাই একমাত্র নির্ভূল পদ্ধতি নয়। চেহারার বদলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে এনআইডিসহ যাবতীয় পরিচয় যাচাইয়ে ধর্মীয় ও প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুন্ন রাখার দাবি জানান তিনি।
এ সময় ওই পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক আছিয়া আহমদ বলেন, বিগত দিনগুলোতে পর্দানশীন নারীরা বেপর্দা হলে শিক্ষা পাবে, নয়ত পাবে না-এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল। এছাড়া আরও বহু রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিতে পর্দানশীন নারীদের চেহারা দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। অথচ চেহারা দেখানো ছাড়াও তথ্য ও প্রযুক্তির যুগে আরও অনেক আধুনিক পদ্ধতি রয়েছে। পর্দানশীন নারীদের অধিকার অক্ষুন্ন রাখতে সেসব পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়।
তিনি বলেন, একজন নারী ছবি তুললে দুটি পাপ হয়। একটি ছবি তোলার পাপ, অন্যটি বেপর্দা হওয়ার পাপ। তাছাড়া ওই ছবিটি পরবর্তীতে যতজন পরপুরুষ দেখবে বেপর্দা হওয়ার পাপ ততই বাড়তে থাকবে। একজন পর্দানশীন নারী তার চেহারা কাউকে দেখাতে চান না, এটা তার গোপনীয়তার অধিকার। এটা তাদের মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ওই পরিষদের সদস্য শাহানা আহমদ, কারিমা আহমদ ও কুলসুম আহমদ প্রমুখ।
পরে তারা মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও জেলা শিক্ষা অফিসারকে স্মরকলিপি দেন।