প্রথমে মেয়েকে পরে তার মাকেও খুন করে আতিকুর

রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১৯ পিএম

রংপুরের পীরগঞ্জে গত শুক্রবার যাত্রাশিল্পী দেলোয়ারা বেগমের (৩১) লাশ ও মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। আর নিখোঁজের দেড় মাস পর নিহত ওই নারীর শিশুকন্যা সাইমার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার সকালে বদনাপাড়ায় মাটির নিচ থেকে সাইমার (৫) লাশ উদ্ধার হয়। শিশুটি দেড় মাস আগে থেকেই নিখোঁজ ছিল। এ খুনের ঘটনায় পুলিশ আতিকুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তার বাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে। যাত্রাশিল্পী হওয়ায় লাশ গ্রহণ করেনি পরিবার।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়া গ্রামের সিমখেত থেকে পুলিশ এক অজ্ঞাত নারীর মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করে। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সিআইডি রংপুর ক্রাইমসিন ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ টিম নিশ্চিত হয় ওই নারী নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার পশ্চিম গোলমুণ্ডা ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত রবিউল ইসলামের মেয়ে দেলোয়ারা বেগম (৩১)।
পীরগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর সেদিনই মাথাটি উদ্ধারের জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালালেও তা উদ্ধার করতে পারেনি। পরে সিআইডি রংপুর ক্রাইমসিন ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ টিম ও পীরগঞ্জ থানা পুলিশের অনুসন্ধানের পর খুনের ঘটনাস্থলের পাশে কিছু পুরাতন কাগজপত্র, মোবাইল সিম পায়।
এর সূত্র ধরে গত শনিবার সকালে পুলিশ খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়া গ্রামের মুনছুর আলীর (তারা মণ্ডল) ছেলে আতিকুর রহমানকে (৪০) গ্রেফতার করে। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে। তারা দুজন স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একসঙ্গে বসবাস করতেন।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আতিকুর হত্যার দায় স্বীকার করলে শনিবার পুলিশ তাকে নিয়ে করতোয়া নদীর টোংরারদহ থেকে নিহত ওই যাত্রাশিল্পীর খণ্ডিত মস্তক উদ্ধার করে।
ওই যাত্রাশিল্পীর শিশুকন্যা সাইমা (৫) নিখোঁজ ছিল। নিখোঁজের দেড় মাস ধরে তার কোনো সন্ধান পাচ্ছিলেন না স্বজনরা। এ নিয়ে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার পর আতিকুরকে পুলিশ শিশু সাইমার নিখোঁজ রহস্য নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে দেড় মাস আগে শিশুকন্যা সাইমাকে (৫) খুনের দায় স্বীকার করে। পরে তার তথ্যমতে পুলিশ সাইমার লাশ পীরগঞ্জের বদনাপাড়ায় মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় রোববার উদ্ধার করে। সাইমার লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার ওসি এমএ ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে এবং আমরা হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। পরে পূর্ণাঙ্গ বিষয় জানানো হবে। খুনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জোড়া খুনের অভিযোগ রয়েছে।