Logo
Logo
×

সারাদেশ

কবি আল মাহমুদের কবর সংস্কারের দাবি

Icon

মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৭ পিএম

কবি আল মাহমুদের কবর সংস্কারের দাবি

১৫ ফেব্রুয়ারি সোনালি কাবিনের কবি খ্যাত আল মাহমুদ ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। যে কয়জন কালজয়ী প্রতিভা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুনাম সুখ্যাতি বাড়িয়েছেন কবি আল মাহমুদ তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একাধারে একজন কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোট গল্পকার শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক ছিলেন। 

সেই কবির মৃত্যুব ছয় বছরেই তার শেষ ঠিকানা কবরটিও অযত্নে-অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে একটি নামফলক ছাড়া আর কিছুই নেই। আল মাহমুদের কবরের উপর দাফন করা হয়েছে আরও কয়েকজনকে । কবরের উপর একাধিক কবর। ডাইনে-বাঁয়ে কবর। কবরটি চিহিনতকরণ করে সংরক্ষষণসহ দ্রুত পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন কবি ভক্তরা। 

কবি আল মাহমুদকে স্বাধীনতা পদকসহ কবির নামে রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানে কবির নামকরণের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন। 

গত শনিবার বিকালে কবি আল মাহমুদের ঘনিষ্ঠ সহচর ৯০ দশকের কবি, বিশিষ্ট গবেষক, আল মাহমুদ একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক মহিবুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে কবি আল মাহমুদের কবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের দক্ষিণ মৌরাইল কবরস্থানে সরেজমিন দেখা গেছে- কবরস্থানটিতে অনেক কবর রয়েছে। কবি আল মাহমুদের কবরের মাথায় শুধু একটি লোহার এঙ্গেল দিয়ে বানানো শুধু নামফলকটি রয়েছে। তার কবরটি খানিকটা উপরে নতুন একটি কবর দেওয়া হয়েছে। ডানে -বাঁয়ে কবর রয়েছে। 

এ সময় কবি মহিবুর রহিম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গৌরব বাংলা সাহিত্যের একজন কালজৈয়ী লেখক কবি আল মাহমুদ মারা যাওয়ার পর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক কারণে ঢাকার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জায়গা না দেওয়ায় দাফন করা যায়নি। পরে কবির পৈতৃক ভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামের কবরস্থানে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে। পরে কবি ড. মাহবুব হাসান, কবি আবদুল হাই সিকদারসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও দেশের প্রতিথযশা কবি সাহিত্যক এবং সাংস্কৃতিক কর্মী এবং সাধারণ মানুষ কবি আল মাহমুদের কবর দেখতে এসেছেন। তারাসহ প্রত্যেকেই দাবি করেছেন কবির কবরটি যথাযথ পদক্ষেপে সংরক্ষিত করতে হবে; যাতে সাধারণ মানুষ, সারা দেশের কবি সাহিত্যিকরা এসে কবির কবরে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন।

গেল বছর ২০২৪ সালে কবি আল মাহমুদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে ব্র্হ্মণবাড়িয়ার মৌরাইলের গোরস্তানে কবির কবর জিয়ারত করতে এসেছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম কবি, বিশিষ্ট গবেষক ও সাংবাদিক আবদুল হাই সিকদার। সঙ্গে ছিলেন- কবি আল মাহমুদ একাডেমির পরিচালক ও কবি মহিবুর রহিম  এবং কবি ও আল মাহমুদ গবেষক ড. ফজলুল হক তুহিন। কবি আল মাহমুদের কবরটির অবস্থা দেখে সেই দিন কবি আবদুল হাই সিকদার তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেইজে লিখেছিলেন- আমাদের সম্মিলিত অবহেলা, উদাসীনতা, অনাদর এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে  মৃত্যুর মাত্র ৫ বছরের মধ্যে হারিয়ে গেছে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদের কবর। এখন কবর বলতে আছে শুধু একটি নামফলক। আল মাহমুদের কবরের উপর দাফন করা হয়েছে আরও কয়েকজনকে। কবরের উপর একাধিক কবর। ডাইনে-বাঁয়ে কবর। সেই দিন তিনি লিখেছিলেন- আহা এ রকম নিষ্ঠুরতা কী আল মাহমুদের প্রাপ্য ছিল!

এছাড়াও কবি আল মাহমুদ মুক্তিযোদ্ধে ও ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় দায়িত্ব পালন করলেও তাকে কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। কবি আল মাহমুদকে স্বাধীনতা পদকসহ কবির নামে রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানে কবির নামকরণের দাবি জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ। এ সংগঠনের উদ্যোগে সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে কবি আল মাহমুদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিক উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ইব্রাহিম খান সাদাতের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সাদেকুর রহমান, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি লিটন হোসাইন জিহাদ প্রমুখ। 

কবি আল মাহমুদের ছেলে মীর মনির মাহমুদ বলেন, কবি আল মাহমুদ কোন দলের নয়। তিনি সবার, তিনি প্রত্যেকের। আমরা আমাদের বাবার পরিচয় ধরে রাখার চেষ্টা করছি। বাবার মৃত্যু দিবসে আমাদের পরিবারের সবাই বাবার কবরে দোয়া করতে যাব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম