Logo
Logo
×

সারাদেশ

রায়ের পরও ইব্রাহিমের মুক্তি পেতে সময় লাগল ৮ বছর!

Icon

যশোর ব্যুরো

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম

রায়ের পরও ইব্রাহিমের মুক্তি পেতে সময় লাগল ৮ বছর!

২০১৭ সালে উচ্চ আদালতে আপিলে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পান খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বাসিন্দা ইব্রাহিম আলী শেখ সাগর। ৮ বছরেও আদালতের মুক্তির আদেশের কপি কারাগারে না পৌঁছানোয় বন্দি ছিলেন তিনি।

বিষয়টি পরিবারের লোকজন কারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে চিঠি দিয়ে তার মুক্তির আদেশের কপি সংগ্রহ করেন।

যাচাই শেষে শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ইব্রাহিম আলী শেখ সাগরকে মুক্তি দেওয়া হয়।

শুধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড নয়, তিনি আরও তিনটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। এর মধ্যে একটিতে যাবজ্জীবন, একটিতে দশ বছর ও আরেকটিতে সাত বছর সাজা ছিল। এর আগে যাবজ্জীবন সাজার মামলাও তিনি খালাস পান। বাকি দুটি মামলায় ইতোমধ্যে সাজার মেয়াদ পূর্ণ করেছেন।

মুক্তিপ্রাপ্ত  ইব্রাহিম আলী শেখ সাগর খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার আমীরপুর ইউনিয়নের চরহরিণাবাদ এলাকার মতিয়ার রহমানের ছেলে।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের একটি হত্যা মামলায় নিম্ন আদালত ইব্রাহিম আলী শেখ সাগরকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পরে মামলাটি উচ্চ আদালতে গেলে ২০১৭ সালে খালাস পান তিনি; কিন্তু কারাগারে তার মুক্তির আদেশ আট বছরেও পৌঁছায়নি। কারাগারে রিলিজ অর্ডার (মুক্তির আদেশ) না আসায় তিনি বন্দি ছিলেন। বিষয়টি যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার নুরশেদ আহমেদ ভূঁইয়া ও জেলার মো. শরিফুল আলমকে অবহিত করেন সাগরের পরিবারের লোকজন।

এরপর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালত, অ্যাটর্নি জেনারেল, সলিসিটর ও কারা কর্তৃপক্ষ বরাবরকে চিঠি দেওয়া হয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি শেষে উচ্চ আদালত থেকে ইব্রাহিম আলী শেখ সাগরের মুক্তির আদেশ (রিলিজ অর্ডার) যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ মুক্তির আদেশ কপি ও আসামি যাচাই করে নিশ্চিত হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাগরকে মুক্তি দেওয়া হয়।

মুক্তি পেয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং কারা কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার শরিফুল আলম বলেন, ইব্রাহিম আলী শেখ সাগর মোট চারটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড, বিস্ফোরক আইনের মামলায় যাবজ্জীবন ও অপর দুটি মামলায় দশ বছর ও সাত বছরের সাজা ছিল। ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজার মামলায় খালাস পান। আর বাকি দুটি মামলায় সাজাভোগ পূর্ণ হয়েছে। উচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেলেও মুক্তির আদেশ না পাওয়ায় তিনি কারাগারে বন্দি ছিলেন। উচ্চ আদালতে যোগাযোগ করে কাগজ পাওয়ার পর যাচাই করে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন সাংবাদিকদের জানান, অধিদপ্তরে আমি নতুন এসেছি। যেখানে যে সমস্যা আছে সব সমাধানের চেষ্টা করছি। আমরা বন্দিদের নিয়েই কাজ করে আসছি। তাদের যাতে কোনো ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে না হয় সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি এ ঘটনায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার নুরশেদ আহমেদ ভূঁইয়া ও জেলার মো. শরিফুল আলমকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাদের পুরস্কৃত করারও ঘোষণা দেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম