Logo
Logo
×

সারাদেশ

আগে বিচার, তারপর অন্য কাজ: ডা. শফিকুর

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম

আগে বিচার, তারপর অন্য কাজ: ডা. শফিকুর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগে বিচার, তারপর অন্য কাজ। ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ সবার।

তিনি বলেন, আমরা এ দেশে মেজরিটি-মাইনরিটির ধারণা একেবারেই মানি না। বাংলাদেশে যারাই জন্মগ্রহণ করেছেন, তারা সবাই এ দেশের মর্যাদাবান ও গর্বিত নাগরিক। ইসলাম কারও ওপর জোর খাটানোর অধিকার রাখে না। অন্য কোনো ধর্মের ওপর জোর খাটাতে পারে না, যদি সেটি ধর্ম হয়ে থাকে।

শনিবার সকালে কক্সবাজারে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সমাজে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু বলে যুদ্ধ লাগিয়ে রাখা হয়েছিল। যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের ভাই-বোনদের নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের সম্পদ গ্রাস করা হয়েছে, জায়গা-জমি দখল করা হয়েছে, ইজ্জতের ওপর হাত দেওয়া হয়েছে, ক্ষেত্রবিশেষে তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এর দায় চাপানো হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর ওপর।

ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোথায় কোথায় জামায়াতের কর্মীরা এসব অপকর্ম করেছে, তা সুস্পষ্টভাবে নাম-ঠিকানা দিয়ে আমাদের জানান। আপনাদের কথা দিচ্ছি, আমরা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করব। আমরা নিশ্চিত- এসব অপকর্মের সঙ্গে আমাদের সহকর্মীরা জড়িত নয়।

আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের নেতৃত্বে আমরা ছিলাম। সাড়ে ১৫ বছর আমরা আমাদের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি, কিন্তু স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে পারিনি। কিন্তু তোমাদের নেতৃত্বে জাতি শেষ আঘাতটি ফ্যাসিবাদের ওপর দিয়েছিল এবং সফল হয়েছিল।

আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড প্রসঙ্গে জামায়াত আমির আরও বলেন, অনেকে নিজেরাই কৃতিত্ব দাবি করেন— আমি মাস্টারমাইন্ড, অমুক ভাই মাস্টারমাইন্ড। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, মহান রব্বুল আলামিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে। এখানে কোনো মাস্টারমাইন্ড নেই।’ 

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশ স্বাধীনতার পর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আমরাও সেই প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু স্বাধীন বিচারব্যবস্থা আমরা এখনো পাইনি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে আমাদের ১১ জন শীর্ষ নেতাকে ঠান্ডা মাথায় বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না, তবে সব হত্যার বিচার চাই। বিশেষ করে ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার অবশ্যই হতে হবে। আগে বিচার, তারপর অন্য কাজ। বিচার না হলে শহিদদের আত্মা কষ্ট পাবে।’

কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি

কক্সবাজারে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, কক্সবাজারে সবকিছু আছে, কিন্তু এখানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এটা কক্সবাজারবাসীর প্রতি চরম অবিচার।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের বক্তব্য প্রসঙ্গেও কথা বলেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান। পুলিশ বাহিনীকে সতর্ক করে তিনি বলেন, পুলিশ ভাইদের বলছি, বেনজীরের ফাঁদে পা দেবেন না।’

এদিন সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। লক্ষাধিক মানুষ সমাবেশস্থল ছাড়িয়ে আশপাশের রাস্তা ও প্রধান সড়কের অন্তত তিন কিলোমিটার পর্যন্ত জনস্রোত দেখা গেছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতির কথা বলা হয়েছিল। তবে ধারণার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মানুষ এই সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

শনিবার সকাল ৮টায় কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কক্সবাজার জেলা শাখার আয়োজনে এ সম্মেলন শুরু হয়। কুতুবদিয়া ও টেকনাফসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে জনস্রোত তৈরি হয়। শহরের বিভিন্ন স্থানে রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ দিয়ে সজ্জিত করা হয়। সমাবেশস্থলের আশপাশে টানানো হয়েছে শহিদ আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, রাজশাহীর শহিদ আলী রায়হান এবং শহিদ সাকিব আনজুমের ছবি সম্বলিত ব্যানার। 

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ আনোয়ারী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, মুহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরীসহ দলের শীর্ষ নেতারা।

সম্মেলনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। 

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম