Logo
Logo
×

সারাদেশ

মানবপাচারের শিকার হয়ে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে যশোরের জাফর

Icon

যশোর ব্যুরো

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩১ এএম

মানবপাচারের শিকার হয়ে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে যশোরের জাফর

সাইপ্রাসে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ছেড়েছিলেন ঘর। তবে মানব পাচারকারীদের হাতে পড়ে তিনি বর্তমানে ইউক্রেনে। রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছেন কিয়েভ বাহিনীর বিরুদ্ধে। পাচারের শিকার হয়ে তাকে এ পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে।  ঘটনাটি ঘটেছে যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের সরদারপাড়ার জাফর হোসেনের সঙ্গে।

সম্প্রতি মোবাইল ফোনে পরিবারকে পাচার ও তার বর্তমান অবস্থার কথা জানিয়েছেন জাফর। যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যুর আতঙ্কে তিনি এখন বাড়ি ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। জাফর ওই এলাকার খায়রুল সরদারের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক। জাফরের এই পরিণতিতে দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

জাফরের বাবা খায়রুল সরদার জানান, পাঁচ মাস আগে ঢাকার একটি এজেন্সির মাধ্যমে সাইপ্রাসে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন জাফর। এ জন্য ওই এজেন্সিকে দিতে হয় ৯ লাখ টাকা। দালালচক্র জাফরেকে প্রথমে সৌদি আরবে নিয়ে যায়। সেখানে দুই মাস রেখে নিয়ে যায় দুবাই। তারপর তাকে বিক্রি করে দেয়।

বর্তমানে রাশিয়ায় রয়েছে জাফর। সেখানে যাওয়ার পর তাকে বলা হয়, আর্মিদের কাপড় পরিস্কার করতে হবে। কিন্তু তাদের নিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধের ময়দানে পাঠানো হয়েছে।

খায়রুল সরদার বলেন, ‘জাফর কান্নাকাটি করছে। সে জানিয়েছে, যুদ্ধ করতে গিয়ে একজন বাংলাদেশি মারা গেছে। আহতও হয়েছে একজন। জাফর দেশে ফিরতে চাইছে। না হলে তার মৃত্যু হবে বলে জানিয়েছে।’

এদিকে স্বামীর চিন্তায় শুধু কাঁদছেন জাফরের স্ত্রী খাদিজা খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী অনেক কষ্টে আছে। আমি তাকে ফিরে পেতে চাই। কয়েকদিন আগে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। সে বলেছে, আমার সন্তানদের তুমি দেখে রেখ।’

পাচারের শিকার জাফরের মা-বাবা জানান, মামাতো ভাই মাহাবুবুর রহমানের মাধ্যমে ঢাকার এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাদের। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ঢাকার হাজি ক্যাম্প এলাকার তামান্না নামে এক মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করে বনানীর ৪ নাম্বার রোডের হাসান এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে গেছে জাফর।’

মাহাবুবুর বলেন, ‘এজেন্সিতে জাফরের পাসপোর্ট প্রথমে জমা দেওয়া হয় সাইপ্রাসে যাওয়ার জন্য। সাইপ্রাসের ভিসা না হওয়ায় দুই বছর পর বলে, রাশিয়ায় লোক যাচ্ছে, সেখানে পাঠাবে। আমরা বলি, রাশিয়া যুদ্ধের দেশ ওই জায়গায় তো নিরাপদ নেই। তারা (এজেন্সি) বলে, নিরাপদ আছে ওই জায়গায় ক্লিনারের কাজ করবে। যুদ্ধের কাহিনী ওরা দেখতে পারবে না, জানবেও না।  এভাবে নিয়ে যাওয়ার পর এখন বিপদে পড়েছে। তারা এখন অস্ত্র হাতে ট্রেনিং দিয়েছে। জাফর মাটির নিচে বাংকারে আছে। এখন সে জীবিত আছে নাকি মৃত কোনো খোঁজখবর পাচ্ছি না।’

জাফরকে ফিরিয়ে আনতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাহবুবর রহমান।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম