Logo
Logo
×

সারাদেশ

দেশের বৃহত্তম ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল’ ভাঙচুর

Icon

যশোর ব্যুরো

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম

দেশের বৃহত্তম ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল’ ভাঙচুর

যশোরে নির্মিত দেশের অন্যতম বৃহত্তম ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল’ এক্সকেভেটর দিয়ে ভেঙে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাতুড়ি-শাবল ও একটি এক্সকেভেটর দিয়ে শহরের বকুলতলা মোড়ে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি ম্যুরালটি ভাঙচুর করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছাত্র-জনতা ঘোষণা দেন- ওই স্থানে নির্মিত হবে ‘২৪ গণঅভ্যুত্থানে’ নিহত যশোরের দুই শহিদের নামে স্মৃতি ম্যুরাল। ভাঙচুর চলাকালীন ম্যুরাল চত্বরে ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা স্লোগান ও প্রতিবাদী বিভিন্ন গান বাজানো হয়।

ভাঙচুর চলাকালীন ম্যুরাল প্রাঙ্গণে উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা যায়। যদিও গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের দিন ওই ম্যুরালটি আংশিক ভাঙচুর করে ইসলামিক গ্রাফিতি সেটে দেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

গণঅভ্যুত্থানে পতনের পর পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার অনলাইনে ভাষণের ঘোষণা দেওয়ার প্রতিবাদে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ছাত্র-জনতা। নেতারা বলেন, এখনো আমাদের ভাইদের রক্তের দাগ শুকায়নি। তারপরও খুনি হাসিনা প্রকাশ্যে ভাষণ দেওয়ার দুঃসাহস দেখায় কিভাবে? তাই আমরা এই বাংলার মাটি থেকে ফ্যাসিবাদী সরকারের রেখে যাওয়া শেকড় উপড়ে ফেলব।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইসলামী ছাত্র মজলিসের যশোর শহরের সেক্রেটারি আবু দারদা নাঈম সাংবাদিকদের বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান এ বাংলাদেশের শত্রু ছিল। বাবার মতো মেয়েও স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। আমরা শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেছি। আমরা চায় না, এই মাটিতে আওয়ামী লীগ টিকে থাকবে। আমরা আওয়ামী লীগকে উৎখাত করেছি, এই জাতির সামনে আওয়ামী লীগ আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। সেই বিষয়টি লক্ষ্য করে আমরা অনেক দিন ধরে চেষ্টা করেছি যশোরে এ ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দিতে। যশোর পৌরসভায় গিয়ে একটি এক্সকেভেটরের আবেদন করেছিলাম। তারা আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এক্সকেভেটর দিয়েছে। এই স্থানে সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের অর্থায়নে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে নিহত যশোরের দুজন শহিদ ইমতিয়াজ আহমেদ জাবির আর শহিদ আবদুল্লাহর নামে স্মৃতি ম্যুরাল নির্মাণ করা হবে।

জানা যায়, ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর যশোর শহরের বকুলতলায় নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৬ ফুট উচ্চতার দৃষ্টিনন্দন শৈল্পিক অবয়বের ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরালের' নকশা তৈরি করেন বুয়েটের স্থাপত্য বিদ্যা বিভাগের ছাত্রী তাসনিভা রহমান মুমু। ম্যুরাল শিল্পী হিসেবে কাজ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল আজিজ।

ম্যুরালটি পরিপূর্ণ রূপ লাভ করে ২০১২ সালের শেষের দিকে। ম্যুরাল স্থাপনে ব্যয় হয় ২৯ লাখ ৯ হাজার ৯৫ টাকা। এ সম্পূর্ণ টাকা যশোরের ব্যবসায়ী মহল ও সাধারণ মানুষের অনুদান থেকে সংগৃহীত হয়।

এদিকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল ছাড়াও বুধবার মধ্যরাতে যশোর পৌরসভার ভেতরে শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্য, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল, জেলা পরিষদের ভিতরে ম্যুরাল, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শেখ হাসিনার স্মৃতিফলক, মণিহার বিজয় স্তম্ভের প্রাচীরে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালের দৃশ্যপট খোদাই করা ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। সেখান থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা সদর উপজেলা পরিষদের ভেতরে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন।

এছাড়া অভয়নগর, ঝিকরগাছা, কেশবপুরে উপজেলা পরিষদের ভাস্কর্য ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম