বন বিভাগের উপকারভোগীকে কুপিয়ে হত্যা করল খাসিয়ারা

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১১ পিএম

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে আব্দুল করিম (৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে খাসিয়ারা।
বুধবার বিকালে ইউনিয়নের নার্সারি পারপুঞ্জি এলাকায় তার ওপর হামলা করে খাসিয়ারা। সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত আব্দুল করিম কর্মধা ইউনিয়নের নলডরি গ্রামের হাজী হবিব উল্লাহর ছেলে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় লোকজন ও নিহতের ভাই আব্দুল গফফার জানান, আব্দুল করিম বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের একজন উপকারভোগী। পাহাড় জবরদখলকারী খাসিয়ারা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তিনি বুধবার সামাজিক বনায়নে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে কিছু বনডুগি (পাহাড়ি শাক) নিয়ে নার্সারি পানপুঞ্জি এলাকায় এলে খাসিয়ারা তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়।
একপর্যায়ে ৪-৫ জন খাসিয়া যুবক দা দিয়ে পেছন থেকে আব্দুল করিমের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে তিনি আহত হন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। নার্সারিপুঞ্জির কয়েকজন পান ব্যবসায়ী আব্দুল করিমকে পাহাড় থেকে বস্তি এলাকায় নিয়ে যান।
নিহতের ভাই আব্দুল গফফার জানান, খবর পেয়ে আমরা তাকে দ্রুত কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করি; কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ফেঞ্চুগঞ্জ কুশিয়ারা সেতু অতিক্রম করার পর আব্দুল করিম মারা যান। সিলেট ওসমানী হাসপাতালে না গিয়ে ফিরে আসেন। লাশ নিয়ে তারা কুলাউড়া থানায় যান। নিহত আব্দুল করিমের ঘাড়ে (গলার পেছন দিকে), মাথায় ধারালো দায়ের একাধিক কোপ ছিল। নিহত আব্দুল করিমের স্ত্রী, ২ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
সামাজিক বনায়নের অন্যান্য উপকারভোগীরা জানান, খাসিয়ারা পরিকল্পিতভাবে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীকে হত্যা করেছে। তারা চায় না কোনো বাঙালি পাহাড়ে যাক। সামাজিক বনায়নের নামে কেউ যেন পাহাড়ে না যায়। এ নিয়ে কর্মধায় মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ জানান, আমি সাক্ষী দিতে ঢাকায় অবস্থান করছি। বন বিভাগের উপকারভোগীর মৃত্যুর ব্যাপারে আমি খোঁজ নিচ্ছি।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম আপছার জানান, বৃহস্পতিবার সকালে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসানের নেতৃত্বে আমরা ঘটনাস্থল নার্সারিপুঞ্জিতে যাই। পুলিশ যাওয়ার খবর পেয়ে পুঞ্জির পুরুষরা পাহাড়ে আত্মগোপন করেন।
তিনি আরও জানান, নিহত আব্দুল করিমের ভাই আব্দুল গফফার বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশ জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।