দগ্ধ হয়ে শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু, প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম

চাঁদপুরের কচুয়ায় স্কুলে পড়তে গিয়ে আগুনে দগ্ধ হয়ে শিশু শিক্ষার্থী সামিয়া আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষক মাসুদ হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে এ ঘটনায় ওই স্কুলের ৮ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বুধবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোসাদ্দেক হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, শিশু সামিয়া কচুয়া উপজেলার তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গত ২১ জানুয়ারি স্কুলে খেলার সময় আগুনে দগ্ধ হওয়ার পর চিকিৎসাধীন গত ২৬ জানুয়ারি সামিয়ার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনসাপেক্ষে প্রাথমিকভাবে চরম গাফিলতির কারণে ৮ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত, দপ্তরির চুক্তি স্থগিত ও প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সুপারিশ পাঠানো হয়।
এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের উপপরিচালক আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসের মামলার শুনানি শেষে প্রয়োজনীয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বর্তমানে তারা স্কুলে নিয়মিত উপস্থিত হলেও ক্লাশ নিতে পারছেন না। তাদের জায়গায় ৫ জন শিক্ষক দেওয়া হয়েছে বলে জানায় উপজেলা শিক্ষা অফিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি দুপুরে ছুটির পর তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খেলছিল সামিয়া। এ সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ময়লার স্তূপে আগুন দেয় স্কুলের দপ্তরি। এটি দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়ে আরেক শিশু শিক্ষার্থীর সঙ্গে খেলছিল সামিয়া। একপর্যায়ে সামিয়ার পোশাকে আগুন লেগে যায়। এতে দগ্ধ হয় সে।
সামিয়ার পরিবারের অভিযোগ, সামিয়ার গায়ে আগুন লাগার পরপরই তার গায়ে পানি দেননি বা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেননি শিক্ষকরা। এতে সে আরও বেশি দগ্ধ হয়। সামিয়াকে ওই অবস্থায় তার বড় বোন লামিয়ার মাধ্যমে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তারা। এরপর সামিয়াকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন গত ২৬ জানুয়ারি মারা যায় সামিয়া।
এদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে চাঁদপুরের ১ হাজার ১৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক বার্তা পাঠিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। স্কুল চলাকালীন শিক্ষকদের সচেতন থাকার আহবান জানানো হয়েছে এতে।