Logo
Logo
×

সারাদেশ

অবশেষে ঘর পেলেন আসমানী খ্যাত নান্দাইলের সেই শেফালি

Icon

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৮ পিএম

অবশেষে ঘর পেলেন আসমানী খ্যাত নান্দাইলের সেই শেফালি

যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে ঘর পেয়েছেন নান্দাইলের আসমানী খ্যাত সেই শেফালি। কাঁচাভিটায় সিমেন্টের পিলারের উপর টিনের চৌ-চালা ঘর পেয়ে দারুণ আনন্দ তার মনে। আর এ ঘর পাওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের দুঃখ-দুর্দশার অবসান হয়েছে তার।

শেফালি বর্মণ (৫৮) নান্দাইল পৌরশহরের আচারগাঁও নাথপাড়া মহল্লার মৃত অনিল চন্দ্র বর্মণের স্ত্রী। জেলে সম্প্রদায়ের অনিল বর্মণ বাড়ির পাশে থাকা নদীতে মাছ ধরে এবং বিক্রি করে সংসার চালাতেন। এভাবে সুখেই দিন কাটছিল নিঃসন্তান ওই দম্পতির। কিন্তু ৫ বছর পূর্বে স্বামী অনিল বর্মণ মারা যান। বাড়িভিটার ৪ শতক জমি থেকে ২ শতক বিক্রি করে কোনোক্রমে স্বামীর আদ্য-শ্রাদ্ধের কাজ করেন। বাকি ২ শতক জমির ওপর থাকা স্বামীর হাতে গড়া দুচালা টিনের ঘরটিতে বসবাস করতে থাকেন নিঃসন্তান বর্মণ।

কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সে ঘরটি ক্রমান্বয়ে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। ঝাঁজরা হয়ে পড়া টিনের চালের উপর বেশ কয়েকবার অন্যের দেওয়া পলিথিন বিছিয়ে বৃষ্টির দিনে বসবাস করেছেন। ঘরের বেড়ায় সুপারি বা কলাগাছের শুকনো পাতা ঝুলিয়ে রেখে প্রায় একটি আবর্জনার স্তূপ মাথা গোঁজার একমাত্র সম্বল হয়ে দাঁড়িয়েছিল শেফালির।

সরকারি সব ধরনের ভাতা ও সুযোগ সুবিধাবঞ্চিত শেফালি অত্যন্ত সহজ সরল এবং নিভৃতচারী এক নারী। কোনো দিন কারো কাছে কোনো কিছুর জন্য হাত পাতেননি, সাহায্যের জন্য যাননি পৌরসভার মেয়র কাউন্সিলরদের কাছেও। এ বাড়ি ও বাড়ি থেকে খুশি হয়ে যা দিত তাই দিয়েই চলত তার খাওয়াপরা। ফলে ঘর মেরামতের কোনো ক্ষমতা বা সাধ্য কোনোটাই ছিল না তার।

বিষয়টি নিয়ে গত বছর ৫ জুলাই যুগান্তরে  ‘শেফালি যেন এ যুগের আসমানী’ শিরোনামে একটি সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি নজরে আসে নান্দাইলের তৎকালীন সংসদ সদস্য ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীর। তিনি উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে এক লাখ টাকা দিয়ে শেফালির জন্য একটি ঘর নির্মাণের নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর গোলাম হায়দার খান রুপক জানান, যুগান্তর পত্রিকার মাধ্যমে শেফালির দুর্দশার কথা তুলে ধরার কারণেই তিনি একটি ঘর পেয়েছেন। এ কারণে তিনি স্থানীয় প্রতিনিধিসহ যুগান্তর পত্রিকার  প্রশংসা করেন।

নান্দাইল উপজেলার সমাজ সেবা কর্মকর্তা ইনসান আলী (সদ্য বদলি হয়েছেন) জানান, শেফালির দুঃখ দুর্দশার বিষয়টি জেনে তাৎক্ষণিক তার বাড়িতে গিয়ে যা দেখেছিলেন তা সত্যিই অবিশ্বাস্য ছিল। বিষয়টি যুগান্তরে ছাপা হবার পর তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী শেফালিকে একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য এক লাখ টাকা প্রদান করেন। সে টাকা দিয়ে কাজ শুরু করার পর কিছুদিন আবার টাকার অভাবে কাজ বন্ধ থাকে। পরে তিনি (কর্মকর্তা) উদ্যোগ নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে আরও ৪৫ হাজার টাকার ব্যবস্থা করে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন।

নান্দাইল উপজেলায় সদ্য যোগদান করা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ মিজানুল ইসলাম আকন্দ জানান, তারা প্রায়ই এ ধরনের সহায়তা প্রদান করে থাকেন, ভবিষ্যতেও তাদের এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম