কক্সবাজারে আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, ক্ষোভে ফুঁসছে ছাত্রদল-শিবির
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজার শহরের ঘুণগাছতলা এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে মিছিলটি ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার পর আকস্মিকভাবে এ মিছিল বের করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, শহরের প্রধান সড়কের ঘুণগাছতলায় ৮ থেকে ১০ জন নেতাকর্মী মিছিল করেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিসহ নানা স্লোগান দেন। কারও মুখ খোলা থাকলেও কেউ কেউ মাস্ক দিয়ে মুখ ঢেকে রাখেন। তারা ব্যানার হাতে নিয়ে ঝাউতলা মোড় পর্যন্ত যান এবং মাত্র ৩ থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে সরে পড়েন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কক্সবাজারে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভ মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একইসঙ্গে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরও রাস্তায় নেমে আসে। একসঙ্গে তিনটি সংগঠনের মিছিলে কক্সবাজারের রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগবিরোধী’ স্লোগান দেন তারা। ছাত্রনেতারা আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।
শহরের বার্মিজ মার্কেট এলাকায় ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদ বলেন, কিছু দিন আগে আমরা ছাত্রলীগকে বলেছিলাম—‘দেখা না দিলে বন্ধু, কথা কইও না’। তাই হয়তো তারা টুস করে দেখা দিয়ে আবার গর্তে মিলিয়ে গেছে!
জেলা ছাত্রদল নেতা ফাহিমুর রহমান বলেন, শান্ত কক্সবাজারকে অশান্ত করার পাঁয়তারা করছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। তাদের এ ষড়যন্ত্র কক্সবাজারবাসী যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করবে!
আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের কিছুক্ষণ পর ইসলামী ছাত্রশিবির শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি কক্সবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভায় জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুর রহীম নূরী বলেন, এখনো আমাদের শরীরের রক্ত গরম হয়নি। যেদিন রক্ত গরম হবে, সেদিন এই কক্সবাজার থেকে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে! তিনি ঝটিকা মিছিলে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিও জানান।
এরপর আব্দুল্লাহ আল নোমান নামের এক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নোমান মিছিলে অংশ নেননি- তিনি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় শিবির কর্মীরা তাকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কক্সবাজারে দলটির নেতাকর্মীরা আর প্রকাশ্যে আসেননি। কোনো কর্মসূচিও পালন করেননি। অধিকাংশ শীর্ষ নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন, অনেকে গ্রেফতার এড়াতে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী অভিযুক্ত।