রংপুর প্রেস ক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত,গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য উন্মুক্ত

রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৭ পিএম

সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধনের শর্ত ভঙ্গ করে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি এবং ফ্যাসিবাদী নিয়মকানুন করে মাত্র ৩২জন নিয়ে পরিচালনা করায় রংপুর প্রেস ক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়েছে।
সেখানে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মো. ময়নুল হক।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুরে কর্মরত দেড় শতাধিক গণমাধ্যমকর্মীর উপস্থিতিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক।
এদিকে বাতিল হওয়া কমিটির বিরুদ্ধে রংপুরে কর্মরত প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক্স, মিডিয়া ও সরকার অনুমোদিত অনলাইনে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
ক্লাবের বিদ্যমান সবকিছু সিজারলিষ্ট তৈরি করে ক্লাব পরিচালনার দায়িত্ব নেন ময়নুল হক। এসময় রংপুর থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিকের সম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, রংপুর সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজ, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিইউজে, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব, সিটি প্রেস ক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুর, রংপুর রিপোর্টার্স ইউনিটি, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন, রংপুর ফটো জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন, রংপুর অনলাইন রিপোর্টার্স ফোরাম, বৈষম্যবিরোধী সাংবাদিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্য ছাড়াও রংপুরে কর্মরত দেড় শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর ও জেলা নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত হন।
এর আগে প্রশাসক চিঠি দিয়ে রংপুরে বিদ্যমান সব সাংবাদিক সংগঠন, স্থানীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকদেরও দায়িত্বগ্রহণ অনুষ্ঠান বিষয়ে অবহিত করতে চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানান।
দায়িত্বভার গ্রহণের পর এডিসি ময়নুল হক বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা সমূহ (রেজ্রিষ্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ধারা ৯ উপধারা ২ মোতাবেক জারিকৃত আদেশ সংশোধনপূর্বক আমাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ এবং রংপুরের গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে বিকালে প্রেস ক্লাবে আসি। একটি গেট বন্ধ পাই। অন্য গেট খোলা থাকায় সেটি দিয়ে প্রেস ক্লাবে প্রবেশ করি।
তিনি বলেন, এখন থেকে ১৯৬২ সালে সংস্থার আইন অনুযায়ী প্রশাসক হিসেবে আমি প্রেস ক্লাবের কার্যনির্বাহী পর্ষদের সব দায়িত্ব পালন করব। এছাড়াও গঠনতন্ত্র অনুসারে সদস্য হালনাগাদ, খসরা ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তর করব। ক্লাবের ৬ তলা ভবনসহ স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি কোনো সদস্য ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করাসহ দোকান ভাড়া বা দোকান উন্নয়ন করার ক্ষেত্রে আগের উদ্যোগ যাচাই করা হবে। দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান দিয়ে সরকারি খাস জমি বন্দোবস্তের নিয়ম অনুযায়ী আয়-ব্যয়ের হিসাব অডিট করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর্থিক অনিয়ম প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠাকালীন গঠনতন্ত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধন এনে সমাজসেবার অনুমোদন নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হবে। সেই গঠনতন্ত্রের আলোকে রংপুরের যোগ্য ও আগ্রহী সাংবাদিকবৃন্দকে সদস্য করে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে।
এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রংপুরে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা।
এদিকে অবহিতকরণ সভা শেষে নব নিযুক্ত প্রশাসক ময়নুল হক কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে প্রেস ক্লাবে অস্থাবর সম্পদের একটি তালিকা প্রণয়ন করেন। তবে বিলুপ্ত প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনোয়ার হোসেন মনা, সাধারণ সম্পাদক মেরীনা লাভলীকেও অবহতিকরণ সভার নোটিশ দিলেও তারা উপস্থিত হননি।