Logo
Logo
×

সারাদেশ

‘কোথায় পাব ভর্তিসহ পড়ালেখার খরচ’, প্রশ্ন মেডিকেলে চান্স পাওয়া মেঘলার

Icon

আখতারুজ্জামান আখতার, পাবনা

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম

‘কোথায় পাব ভর্তিসহ পড়ালেখার খরচ’, প্রশ্ন মেডিকেলে চান্স পাওয়া মেঘলার

‘আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দীর ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও’- পল্লীকবি জসিম উদদীনের আসমানী কবিতার আরেকটি বাস্তব মিল পাওয়া গেছে এবারে মেডিকেলে চান্স পাওয়া মেধাবী মেঘলাদের বাড়িতে। ঘরতো নয় মাত্র ৬টি টিনের একচালা একটি জীর্ণঘর মেঘলাদের।

ওই ঘরেই একপাশে বাবা-মা অন্যপাশে থাকেন মেঘলা। নেই কোনো পড়ার চেয়ার টেবিল। আর সেই জীর্ণ ঘরেই মেঘলার এতবড় সাফল্য! চরম দরিদ্রতা এবং অভাব কোনোটাই দমাতে পারেনি মেধাবী মেঘলা খাতুনকে।

কিন্তু চান্স পেয়েও ভর্তির টাকা এবং পড়ালেখার খরচের কথা চিন্তা করে মুখে হাসি নেই মেঘলা এবং তার বাবা-মায়ের। ভর্তির তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে তার দুশ্চিন্তাও ততই বাড়ছে। তার প্রশ্ন- ‘কোথায় পাব ভর্তিসহ পড়ালেখার খরচ’।

৪ ফেব্রুয়ারি মেঘলার ভর্তির তারিখ। সরকার ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছেন মেঘলা ও তার বাবা-মা।

মেঘলা এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন। পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা ইউনিয়নের মৌগ্রামের দিনমজুর কৃষক হাসমত মির্জা ও গৃহকর্মী মোছা. চায়না খাতুনের একমাত্র মেয়ে মেঘলা খাতুন।

চরম দরিদ্রতা অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে মেঘলার বেড়ে ওঠা। সন্তানকে ভালো জামাকাপড়, বই-খাতা-কলম দূরে থাকুক, দিনমজুর বাবা ও মা ঠিকমতো দুবেলা খাওয়ার জোগান দিতেই হিমশিম খান। তারপরও অন্যের বই-খাতা ও শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়ে মেঘলা মেধার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এবার দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার এ সাফল্যে আনন্দিত আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী।

কিন্তু হাসি নেই মেঘলা ও তার বাবা-মায়ের মুখে। ভর্তির টাকার এবং পড়ালেখার খরচের চিন্তায় দিশেহারা বাবা-মা এবং মেঘলা।

মেঘলা জানান, তিনি পড়ার বাইরে কখনই কিছু ভাবতেন না। সব সময় বই নিয়েই বসে থাকতেন। তার দরিদ্রতা ও পরিবারের অবস্থা দেখে শিক্ষকরা তাকে বিনা বেতনে প্রাইভেট পড়াতেন। এজন্য তিনি তাদের কাছে ঋণী।

তিনি আরও জানান, ছোটবেলা থেকেই তার ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে ডাক্তার হবে। সৃষ্টিকর্তা তার আশা পূরণ করেছেন। তিনি ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে গরিব অসহায়দের বিনা পয়সায় চিকিৎসাসেবা দিতে চান।

মেঘলার বাবা-মা বলেন, খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে তার মেয়েকে পড়াচ্ছেন। কখনই তারা মেয়ের শখ আবদার পূরণ করতে পারেননি। অন্যের বাড়িতে দিনমজুর খেটে কোনোমতে সংসার চালিয়ে মেয়েকে মেসের খরচ দিতেন। অনেক সময় দিতেও পারতেন না। তারপরও মেয়ে ভালো এবং বুঝমান হওয়ায় কখনই তাদের ওপর চাপ দিত না। মেয়ে ডাক্তারি চান্স পেয়েছে। এতে তারা খুশি; কিন্তু ভর্তির এত টাকা এবং পড়ালেখার খরচ কিভাবে জোগান দেবেন- এই চিন্তায় তো ঘুম আসছে না। সরকার ও সমাজের বিত্তবানরা যদি তার মেয়ের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে খুশি হতেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম